চলতি অর্থবছরে আড়াই শতাংশের বেশি প্রবদ্ধি হবে না: সিপিডি
৭ জুন ২০২০ ১৫:৫১
ঢাকা: মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আড়াই শতাংশের বেশি হবে না বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
রোববার (৭ জুন) ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান এবং অগামী বাজেটের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
করোনাতেও জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৫.২০ শতাংশ, প্রাক্কলন মন্ত্রণালয়ের
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। সিপিডির সিনিয়র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। অর্থবছর শেষে চূড়ান্ত হিসাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয় ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছর, অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার ৮ দশমিক ২০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
সিডিপির প্রতিবেদনে তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে উচ্চ প্রবৃদ্ধির দিকে যাচ্ছিল। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে অর্থনীতি একটা ভিন্ন গতি-প্রকৃতির দিকে ঢুকে গেছে। এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন হতে পারে আমরা সেটা দেখার চেষ্টা করেছি। সেক্ষেত্রে আমরা কতগুলো বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েছি। জিডিপিতে ১৫টি খাত থাকলেও আমরা দেখেছি করোনায় পাঁচটি খাত বড় ধরনের অসুবিধায় পড়েছে। তবে আশার কথা হলো কৃষি খাত ওইভাবে প্রভাবিত হয়নি। কৃষির উৎপাদন মোটামুটি ভালো হয়েছে।’
মূল প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচটি খাতের মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং ও কন্সট্রাকশন খাত প্রত্যক্ষভাবে বড় সমস্যায় পড়েছে। এছাড়া হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও পরিবহন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা যদি ধরে নিই অর্থবছরের বাকি যে সময় আছে তাতে ভালো প্রবৃদ্ধি হবে তারপরও প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। আর এটা হলেও অনেক ভালো প্রবৃদ্ধি হবে। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক দেশে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে।
অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাস প্রবৃদ্ধি ভালো হলেও করোনাভাইরাসের কারণে শেষ চার মাস ভালো যাচ্ছে না। এতে করে প্রবৃদ্ধি কোনভাবেই আড়াই শতাংশের বেশি হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এরপর সামাজিক সুরক্ষা, কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের এই বছরের বাজেট হতে হবে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী বাজেট। যেখানে স্বাস্থ্যখাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বাজেটে ঘাটতি পাঁচ শতাংশের বেশি হলেও সরকারি ব্যয় বাড়াতে হবে। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘অর্থনৈতিক চাপ যতই বাড়ুক না কেন লকডাউনের কথা আমাদের ভাববতে হবে। করোনার ঝুঁকি মাথায় রেখে অর্থনীতি ঘুরে দাড়ানোর সম্ভব হবে না।’