Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থান, চলছে পুলিশের অভিযান


৯ জুন ২০২০ ১৯:২৫

ঢাকা: পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধে এই প্রথম একযোগে মালিক-শ্রমিক নেতারা উদ্যোগী হয়েছেন। তাদের অধীন সমিতি ও কমিটিতে চাঁদা বন্ধে নিজেদের উদ্যোগে চিঠি দিচ্ছেন। তাদের সেই চিঠিতে সব সড়ক-মহাসড়ক ও টার্মিনালে চাঁদা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদার বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযানও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে মালিক সমিতি।

এ উদ্যোদের মধ্যেও একজন পরিবহন শ্রমিক নেতা দাবি করেছেন, টার্মিনাল ও সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ হলেও ঢাকায় কোম্পানিভিত্তিক চাঁদা এখনো বহাল আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি জানিয়েছে, এসব কোম্পানিভিত্তিক বাস চলা উঠিয়ে দিতে প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পরিবহন খাতের বিভিন্ন সূত্র জানায়, এ খাতের শীর্ষ তিন সংগঠন সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, সড়ক পরিহন শ্রমিক ফেডারেশন ও বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে চাঁদা আদায় বন্ধে একমত হয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের সিদ্ধান্তের মূল কথা— এখন থেকে পরিবহন খাতের সব ধরনেরর চাঁদা আদায় বন্ধ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোথাও চাঁদা তোলা যাবে না। সারাদেশে আমাদের সংগঠনের সব শাখায় এই নির্দেশনা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কেউ কোথায় চাঁদা নিলে তাকে ধরিয়ে দিতে হবে। এরই মধ্যে পুলিশের অ্যাকশনও শুরু হয়েছে। পুলিশ আটকও করেছে। এ অভিযান চলছে।’

সম্প্রতি পুলিশ প্রধান পরিবহন মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এরপরই মালিক নেতাদের সংগঠনগুলো থেকে নির্দেশনা আসে চাঁদা বন্ধের।

বিজ্ঞাপন

পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন থেকে পরিবহনে চাঁদা আদায় একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। এ খাতে প্রতিদিন কোটি টাকা চাঁদা উঠত সারাদেশে— এমন বিষয়টি বারবার আলোচনায় এসেছে। আর এসব অভিযোগের তীর থাকত পরিবহন খাতের শীর্ষ সংগঠনগুলোর দিকে।

তবে এবারই প্রথম শীর্ষ সংগঠনগুলো চাঁদার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অবস্থান নিতে গেছে। সব সংগঠনের যৌথ সিদ্ধান্তের চিঠি ছাড়াও পৃথকভাবে সংগঠনগুলো চাঁদার বিরুদ্ধে চিঠি ইস্যু করতে দেখা গেছে। এসব চিঠিতে কঠোরভাবে নিদেশ দিয়ে বলা হয়েছে, টার্মিনাল, সড়ক, মহাসড়ক বা অন্য কোথাও গাড়ি থেকে কোনো ধরনের চাঁদা তোলা যাবে না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ খোকন সড়ক পরিবহনে চাঁদাবাজির অভিযোগ করে আসছিলেন দীর্ঘ দিন থেকে। সম্প্রতি মালিকদের নেওয়া এমন যৌথ সিদ্ধান্তের পর তিনিও স্বীকার করে নেন, মালিকদের ঘোষণার পর টার্মিনাল ও সড়কে চলা পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় বন্ধ হয়েছে। তবে ঢাকার মধ্যে হিউম্যান হলার, লেগুনা ও সিএনজি থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ তার।

হানিফ খোকনের অভিযোগ, প্রতিটি হিউম্যান হলার থেকে দিনে সাত থেকে আটশ টাকা চাঁদা আদায় করা বন্ধ হয়নি। এছাড়া ঢাকায় সুপ্রভাত, ট্রান্স সিলভা, মক্কা, সালসাবিল, ভিআইপি’র মতো কোম্পানিভিত্তিক বাসগুলো থেকে চাঁদা তোলা এখনো বন্ধ হয়নি। এসব কোম্পানির নিজস্ব কোনো বাস নেই। বিভিন্ন মালিক টাকা দিয়ে কোম্পানির অধীনে বাস দেন। আবা প্রতিদিন বাসের আয় থেকে কোম্পানিকে চাঁদা দিতে হয়।

কোম্পানিভিত্তিক বাসের চাঁদা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক ‍পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, কোম্পানিভিত্তিক বাস উঠিয়ে দিতে আমরা প্রস্তাব করেছি। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এসব চাঁদা আর নেওয়া যাবে না। দেশের কোথায় কেউ পরিবহনে চাঁদা তুললে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা নিজেরা খবর পেলেও তাদের পুলিশে ধরিয়ে দিচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) সোহেল রানা সারাবাংলাকে বলেন, হাইওয়ে পুলিশসহ পুলিশের সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় পরিবহনে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গণপরিবহন চাঁদাবাজি চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত পরিবহন খাতে চাঁদা পরিবহন মালিক সমিতি পুলিশের অভিযান বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সড়ক পরিবহন সড়ক পরিহন শ্রমিক ফেডারেশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর