নাসিমের মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি— শোক প্রস্তাবের আলোচনায় এমপিরা
১৪ জুন ২০২০ ১৬:১৭
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে রাজনীতি অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সরকার ও বিরোধী দলীয় নেতারা।
তারা বলছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মোহাম্মদ নাসিমের মতো জাতীয় একজন নেতার মুখটাও সবাই শেষবারের মতো দেখতে পারেননি। তাই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও বেশি কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
আরও পড়ুন- ‘রাজনীতিতে যারা পাশে থেকে সাহস-সমর্থন দিয়েছেন, তারা চলে যাচ্ছেন’
রোববার (১৪ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা এসব কথা বলেন।
দুই দিন বিরতির পর এদিন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের মুলতবি অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনের শুরুতে সম্পূরক কার্যসূচি শোক প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন স্পিকার। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। এসময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর জীবন বৃত্তান্তসহ শোক প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয়। এরপর মোহাম্মদ নাসিমের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন- সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আর নেই
একদিনে দুই এমপি’র মৃত্যুতে সংসদে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। এ পরিস্থিতিতেই শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের; আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ডা. হাবিবে মিল্লাত ও মৃণাল কান্তি দাস; ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবং জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ।
আলোচনায় জি এম কাদের বলেন, সদা হাস্যোজ্জল ও বিনয়ী মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা। এমপি-মন্ত্রী ও জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর সন্তান হয়েও তিনি অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। জনগণের আস্থা অর্জন করেছিলেন। আমরা একই দল না করলেও তাকে দেখলে মনে হতো, তাকে সব কথাই বলা যায়। শত বিপদ ও ঝুঁকির মুখেও তিনি পিছু হটেননি। সব বাধা উপেক্ষা করে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যেতেন তিনি।
আরও পড়ুন- ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ আর নেই
সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক কারণে পিতা-পুত্র একসঙ্গে জেলে থাকার ঘটনা মোহাম্মদ নাসিমের ক্ষেত্রে ঘটেছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে সবসময় সামনে থাকতেন তিনি। বারবার পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। রাজনীতিতে তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, তা জনগণ অনন্তকাল মনে রাখবে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে মোহাম্মদ নাসিমের সাহসী ভূমিকা তুলে ধরে ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, ১৪ দলের সমন্বয়ক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কখনো ভাবিনি, আমরা অন্য দলের। মনে হয়েছে একই রাজনৈতিক পরিবারের। সবাইকে সহজেই আপন করে নিতেন।
আরও পড়ুন- সংসদে শোকের ছায়া
জাপা নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, শুধু সরকারি দলের নেতাকর্মীদের নয়, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরও খোঁজ-খবরও রাখতেন তিনি। সংসদে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখার পরামর্শ দিতেন সবসময়। পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রজীবন থেকে লড়াই-সংগ্রাম শুরু করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বহুবার বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেনতিনি।
পরে বক্তব্য রাখেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর পর এক মিনিট নিরাবতা পালন করে মোহাম্মদ নাসিম ও শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ’র আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। এরপর দিনের অন্যান্য কার্যসূচি স্থগিত করে অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
জাতীয় সংসদ মোহাম্মদ নাসিম মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু শোক প্রস্তাব সংসদ অধিবেশন