Wednesday 23 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘লক্ষ্য ১ কোটি, দেখতে চাই কে কতটি গাছ লাগিয়েছে’


১৫ জুন ২০২০ ২১:৪০ | আপডেট: ১৫ জুন ২০২০ ২২:১৭
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশকে বাঁচাতে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবাইকে বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করে তিনি জানিয়েছেন, এবারের লক্ষ্য প্রায় ১ কোটি গাছ লাগানো।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলেতে হবে। সারাদেশে সবুজ বেষ্টনী গড়তে পারলে সেটা ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে দেশকে রক্ষা করবে। আমাদের কৃষক লীগসহ সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বলব, প্রত্যেকে তিনটি করে গাছ লাগান। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, গাছের যত্ন নিতে হবে। এবার দেখতে চাই, কে কতটি গাছ লাগিয়েছে। দেখতে হবে, কার গাছে কী ধরেছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ জুন) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছ বেশি করে লাগানোর নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন এ দেশের কামার, কুমার, জেলে, তাঁতী মেহেনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে তাদের জীবনটাকে উন্নত করবেন। বাঙালি জাতি যেন বিশ্ব দরবারের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা পথচলি। বাংলাদেশ একটা বদ্বীপ। এই বদ্বীপে টিকে থাকা এবং উন্নতি করা খুবই কঠিন কাজ। প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। বদ্বীপকে বাঁচাতে হলে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ প্রয়োজন। তাই আসুন, এই মুজিববর্ষে আমরা সবাই মিলে বৃক্ষরোপণ করে আমাদের দেশকে রক্ষা করি। দেশের পরিবেশকে রক্ষা করি, আর মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করি। গাছ লাগিয়ে দেশের পরিবেশ রক্ষা করি। আবার নিজেরা লাভবান হই।

তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, এই ঢাকা শহরে কথাই যদি ধরি— কত গাছ ছিল, সব কেটে ফেলেছিল। তেজগাঁও থেকে বাংলা একাডেমি পর্যন্ত পুরো এলাকায় কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। বিভিন্ন জায়গায় বিশাল বিশাল গাছ ছিল। প্রতিটি জায়গায় গাছে গাছে সবুজ ছিল ঢাকা শহর। যখনই জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হলো, এই তেজগাঁও এলাকা থেকে বাংলা একাডেমী পর্যন্ত সব গাছ কেটে ফেললো। তার একটা ভীতি ছিল, এজন্যই কেটে ফেলেছিল। এভাবে সারাদেশে বৃক্ষ নিধন করেছে। আমরা যেমন রোপণ করি, তারা নিধন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, এবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘টাইম ফর নেচার’। অর্থাৎ প্রকৃতির জন্য সময়। প্রকৃতির জন্য সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এমন একটা পরিবেশ কাজ করছি, করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গেছে। আবার এর ভালো দিকও আছে। প্রাকৃতিক ভারসম্য যেটা নষ্ট হচ্ছিল, ওজন স্তর ক্ষয়ে যাচ্ছিল, প্রকৃতি যেখানে সম্পূর্ণরূপে দূষিত হয়ে যাচ্ছিল, করোনাভাইরাস আসার পর তিন-চার মাসে প্রকৃতি আবার হেসে-খেলে উঠেছে। সবুজে সবুজে ভরে যাচ্ছে, ফুলে ভরে যাচ্ছে। এটাও কিন্তু প্রকৃতির অদ্ভূত খেলা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, এই একটা অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আমরা নিলাম। এটা শুধু উদ্বোধন করলে হবে না, কে কত গাছ লাগালো, এবার সেটাও দেখতে চাই। আবার শুধু গাছ লাগালেই হবে না, গাছ লাগানোর পরে গাছের পরিচর্যা করতে হবে। গাছকে লালন-পালন করতে হয়। নিজের সন্তানকে যেমন লালন-পালন করতে হয়, গাছেরও কিন্তু যত্ন করতে হবে। তাহলে সে ফল দেবে। আর আমি ফল খাব, যত্ন করব না— সেটা তো হয় না। আর মাঝে মাঝে খবর নেব, কার গাছ কত বড় হলো? কে কি পেল কি পেল না, সেটাও একটু দেখতে হবে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে এক কোটি গাছ লাগানোর লক্ষ্য জানিয়ে তিনি বলেন, অন্তত এক কোটি গাছ আমরা লাগাব। কিন্তু এই কর্মসূচি আমাদের অব্যাহত থাকবে। আমরা আরও বেশি গাছ লাগাতে চাই। তিন ধরনের গাছ লাগালে আমরা তিন কোটি গাছ লাগাতে পারি। সেটা মাথায় রেখেই আমাদের নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে আমি আজকের এই দিনে আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন সকলে মিলে গাছ লাগাই। গাছ লাগিয়ে দেশের পরিবেশ রক্ষা করি।

এরপর এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ‘বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ১৪২৭’-এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। গণভবন প্রান্তে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান,  প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ।

এদিকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সংযুক্ত হন কৃষক লীগের নেতারা। আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি সমীর দে। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কৃষক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

কৃষক লীগের বৃক্ষরোপণ গাছ লাগান বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন মুজিববর্ষ সবুজ বেষ্টনী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর