মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে আইজিপি’র ৫ নির্দেশনা
১৭ জুন ২০২০ ০১:০৩
ঢাকা: বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চান বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেন, রূপকল্প- ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে নিরলস কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়নের এ অভিযাত্রায় সামিল হয়ে বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হতে হবে। করোনাকালে এই অভিযাত্রায় বাংলাদেশ পুলিশ অনেক দূর এগিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) বিকেলে আইজিপি পুলিশ সদর দফতর থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা ও ময়মনসিংহ রেঞ্জ এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন। পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) মো. সোহেল রানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, গণমানুষের দোরগোড়ায় পুলিশিংকে পৌঁছে দিতে হবে। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে প্রান্ত থেকে কেন্দ্র— সবখানে নিতে হবে উন্নয়নমুখী উদ্ভাবনী পুলিশিং কার্যক্রম। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কেন্দ্রিক বিট পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে তার দায়িত্বাধীন এলাকার প্রত্যেক নাগরিকের সুখ-দুঃখের খোঁজ নেবেন। বিপদে ও প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। এ বিষয়ে একটি এসওপি প্রণয়ণের কাজ চলমান রয়েছে। শিগগিরই সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাসহ একটি এসওপি সব ইউনিটে পৌঁছে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা কোনোভাবেই কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না। পুলিশকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা অবৈধ অর্থ উপার্জন করে বড়লোক হতে চান, বাংলাদেশ পুলিশে তাদের স্থান নয়। তারা পুলিশের চাকরি ছেড়ে বাড়ি গিয়ে ব্যবসা করে বড়লোক হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
আইজিপি বলেন, দেশের মানুষকে নির্মোহভাবে ভালোবাসতে হবে, মানুষকে কোনোভাবে নির্যাতন ও নিপীড়ন করা যাবে না। সব উপায়ে সর্বোতভাবে মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দায়িত্ব পালনে শারীরিক শক্তি নয়, আইনি সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে।
মাদকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। কেো পুলিশ সদস্য মাদকের সঙ্গে অথবা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ প্রসঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্বরত অবস্থায় আহত, গুরুতর আহত ও নিহতের ক্ষেত্রে কল্যাণ সংক্রান্ত সুবিধা রয়েছে। এর পাশাপাশি চাকরিরত অবস্থাতেও সদস্যদের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে। তবে ভালো কাজের স্বীকৃতির পাশাপাশি মন্দ কাজে কঠোর ব্যবস্থাও নিতে হবে। শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কোনো শৈথিল্য দেখানো হবে না। কোনো পুলিশ সদস্যের ব্যক্তিগত অপরাধের দায়ভার তাকেই বহন করতে হবে।
আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়ন ও প্রধানমন্ত্রীর সব প্রচেষ্টার ঐকতানে আমরা যেভাবে কাজ করছি, তা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের অন্যতম অংশীদার হবে বাংলাদেশ পুলিশ।
আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে করোনা সংক্রমণ রোধে দায়িত্ব পালনকালে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। যারা অসুস্থ আছেন, তিনি তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।