চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি স্বাস্থ্য অধিদফতরের
১৮ জুন ২০২০ ১৪:১০
ঢাকা: খুলনায় রোগীর স্বজনদের হামলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা ডা. আবদুর রাকিব খানের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। একই সঙ্গে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ সময় চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিও জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বুধবার (১৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বেলাল হোসেনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গভীর দুঃখের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে যে, ডা. আবদুর রাকিব খান, অধ্যক্ষ, মেডিক্যাল অ্যাসিস্টেন্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ম্যাটস) বাগেরহাট, রোগীর স্বজনদের কাছে নৃশংসভাবে মারধরের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ জুন সন্ধ্যা ৭টায় খুলনা শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মৃত্যুতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন ও তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনতিবিলম্বে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ১৬ জুন খুলনায় রোগীর স্বজনদের হামলায় আহত চিকিৎসক ডা. রাকিব উদ্দিন মারা যান। এক প্রসূতি নারী মারা গেলে রোগীর স্বজনরা তার ওপর হামলা করেছিল।
ডা. রাকিবের ছোট ভাই খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম জানান, নগরীর মোহাম্মদ নগরের পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমকে গত ১৪ জুন সিজারের জন্য রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টায় তার অপারেশন হয়। বাচ্চা ও মা প্রথমে সুস্থ ছিলেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ হলে ১৫ জুন সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানের চিকিৎসকরাও রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ করার চেষ্টা করেন। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে ঢাকায় রেফার্ড করেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে ১৫ জুন রাতে শিউলী বেগম মারা যান।
সাইফুল ইসলাম জানান, ১৫ জুন রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে শিউলি বেগমের স্বজনরা আমার বড় ভাই ডা. রাকিবকে লাথি-ঘুষি মারে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মাথার পেছনে জখম হয়। তাকে প্রথমে গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছন।
সাইফুল জানান, ডা. রাকিবের দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। মেয়ে এবার এসএসসি পাস করেছে। ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল বলেন, ডা. রাকিবের মৃত্যুর খবর শুনে রাইসা ক্লিনিকে গিয়েছি। এখনো চিকিৎসকের মরদেহ আবু নাসের হাসপাতালে রয়েছে।
আবু নাসের হাসপাতালের পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র গোস্বামী জানান, মাথায় আঘাতের কারণে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ নিহতের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে।