চসিকের অস্থায়ী তিন পশুর বাজারে আপত্তি সিএমপির
২৪ জুন ২০২০ ২৩:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বন্দরনগরীর তিনটি স্থানে ঈদুল আযহার পশুর বাজার বসানো হলে ভয়াবহ যানজট এবং করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সিএমপির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসব স্থানে অস্থায়ী বাজারের অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ করেছে সিএমপি।
বুধবার (২৪ জুন) সিএমপির উপ-কমিশনার (বিশেষ শাখা) মো. আব্দুল ওয়ারিশ খান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার বরাবরে এই চিঠি দিয়েছেন।
সিএমপির কাছে তথ্য আছে, চসিক এবার সাতটি স্থানে অস্থায়ী পশুর বাজার বসানোর জন্য ইজারা দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কর্ণফুলী পশুবাজার (নূরনগর হাউজিং), সল্টগোলা রেলক্রসিং, স্টিলমিল, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ (কাটগড়), কমল মহাজন হাট, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে বাটারফ্লাই পার্কের পাশে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ এবং নিউমুরিং আবাসিক এলাকার পাশে (বড়পোল) বন্দর কর্তৃপক্ষের খালি জায়গা।
এর মধ্যে যে তিনটি স্থানে সিএমপির আপত্তি আছে সেগুলো হচ্ছে- স্টিল মিল, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ (কাটগড়) এবং নিউমুরিং আবাসিক এলাকার পাশে (বড়পোল) বন্দর কর্তৃপক্ষের খালি জায়গা।
স্টিল মিল বাজার ও পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের বিষয়ে সিএমপি চিঠিতে উল্লেখ করেছে, স্টিল মিল বাজার সম্পূর্ণভাবে সড়কের ওপর বসে। বিদ্যালয় মাঠে খালি জায়গা বেশি না থাকায় সেই বাজারটিও বসে সড়কের ওপরই। প্রতিবছর দুটি বাজারের বড় অংশই সড়ক দখল করে বসে।
সিএমপির উপ-কমিশনার আব্দুল ওয়ারিশ খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘পতেঙ্গায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে সড়কের ৫০ শতাংশে বেস্টনী দিয়ে নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশে যদি কোরবানির পশু রাখা হয় তাহলে সেই সড়ক দিয়ে আর যানবাহন চালানো যাবে না। এতে শহরে ভয়াবহ যানজট হবে। এছাড়া এত অল্প জায়গার ওপর দুটি বাজার বসলে মানুষের ভিড় হবে প্রচুর। এখন তো সামাজিক দূরত্বের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। সেটা মেইনটেইন করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।’
বড়পোল এলাকায় বাজার নিয়ে আপত্তির বিষয়ে বলা হয়েছে- মাঠটিতে পশুর হাট বসানোর মতো জায়গা নেই। মাঠের বড় অংশে রাখা হয়েছে জলাবদ্ধতা প্রকল্পে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের সরঞ্জাম। এছাড়া মাঠটি দিনে দুইবার জোয়ারের পানিতে দুই ফুট করে প্লাবিত হয়। এখানে বাজার বসানোর অনুমতি দিলে সেটি কার্যত মাঠের পরিবর্তে বসবে পোর্ট কানেক্টিং রোডে।
উপপুলিশ কমিশনার ওয়ারিশ বলেন, ‘গতবছর আমাদের আপত্তির কারণে বড়পোল এলাকায় বাজার বসানো হয়নি। কিন্তু এবার আবারও অস্থায়ী বাজার বসানোর জন্য সিটি করপোরেশন মাঠটি নির্ধারণ করেছে। পোর্ট কানেক্টিং রোডে সারাদিন ভারি যানবাহন চলাচল করে। চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত গাড়ির প্রায় শতভাগই চলাচল করে এই সড়ক দিয়ে। এখান বাজার বসালে সড়কটি অচল হয়ে বন্দরের কাজেও মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটবে।’
‘আমরা সিএমপির পক্ষ থেকে মাননীয় মেয়রের কাছে জনদুর্ভোগ এড়াতে এবং সামাজিক দূরত্ব বিবেচনায় এই তিনটি স্থানে বাজার না বসানোর অনুরোধ করেছি। এটা সম্পূর্ণ মাননীয় মেয়রের এখতিয়ার। আশা করি মেয়র মহোদয় সুবিবেচনা করবেন।’ বলেন আব্দুল ওয়ারিশ খান
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দুটি স্থায়ী বাজার আছে, সাগরিকা ও বিবিরহাট। এর বাইরে আমরা গতবছর আরও ৬টি অস্থায়ী বাজার ইজারা দিয়েছিলাম। এবার ৪টি অস্থায়ী বাজার আমরা ইজারা দিয়েছি। মোট ৬টি বাজার বসানোর অনুমতি চেয়ে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছি। সিএমপির আপত্তির বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। লিখিতভাবে দিলে তখন বিবেচনা করবো। আর এ বিষয়ে সিএমপি জেলা প্রশাসনে আপত্তি জানালে ভালো হতো। কারণ বাজারের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।’