ডাক্তারদের থাকা-খাওয়ায় দুর্নীতি হয়নি: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
৩০ জুন ২০২০ ২১:০৫
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকদের থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে জাতীয় সংসদে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের থাকা-খওয়ার বিষয় নিয়ে যে কথা হয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। ৫০টি হোটেল ভাড়া হয়েছে। সেখানে তিন হাজার ৭০০ মানুষ একমাস থেকেছে। প্রতিটি রুমের ভাড়া ১১০০ টাকা। খাওয়ার খরচের কথা যেটা বলা হচ্ছে, সেটি সম্পূর্ণ ভুল। সেখানে দিনের তিনটি মিলের জন্য খরচ ৫০০ টাকা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে মঞ্জুরী দাবির ওপর আনীত ছাঁটাই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন। তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেন, সরকার কাজ করেছে বলেই করোনায় অন্যান্য দেশের থেকে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার কম। তিনি বলেন, আইসিইউ নিয়ে অনেক কথা হলো। ভেন্টিলেটর নিয়ে বিরাট হৈ চৈ। কিন্তু দেখা গেছে, ভেন্টিলেটরের কোনো প্রয়োজনই নেই। ভেন্টিলেটরে যারা গেছেন, তাদের প্রায় সবাই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের ৪০০ ভেন্টিলেটর আছে। এর মধ্যে ৫০টিও ব্যবহার হয়নি। সাড়ে তিনশ ভেন্টিলেটর অব্যবহৃত পড়ে আছে।
জাহিদ মালেক বলেন, কেউ কিন্তু আগে বলেনি পিপিই লাগবে। যখন বলা হলো, তখন সারাবিশ্ব লকডাউন। এই লকডাউনের কারণে আমরা পিপিই পাচ্ছিলাম না। যন্ত্রপাতি পাচ্ছিলাম না। পরে আস্তে আস্তে ব্যবস্থা করছি। এখন আর সেই অভিযোগ নেই। এর মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। এখন হাইফ্লো অক্সিজেনের প্রয়োজনের কথা বলা হচ্ছে। আমরা এক হাজার অক্সিজেনের অর্ডার দিয়েছি। প্রায় ১০ হাজার নতুন সিলিন্ডার বানানো হয়েছে।
সংসদ সদস্যদের আনা সমন্বয়হীনতার অভিযোগ অস্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই। পাঁচ মাস কিন্তু আমরাই মাঠে আছি। ২৫ দিনে বসুন্ধরায় দুই হাজার বেডের হাসপাতাল বানিয়েছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। সবার সহযোগিতা পেলে কোভিড চলে যাবে। স্বাভাবিকভাবে অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সংসদ সদস্যরা আমাদের কেবল দোষারোপ করে গেছেন। আমরা কী কাজ করেছি, তা আসেনি তাদের বক্তব্যে। কোভিড আসার শুরু থেকেই আমরা কাজ করছি। চীনে কোভিড দেখা দেওয়ার পরপরই আমরা পোর্টগুলোতে স্ক্রিনিংসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রতিটি জেলা উপজেলার হাসপাতালে কোভিডের জন্য আলাদা ইউনিট করেছি। আমরা জাতীয় পর্যায়ে কমিটি তৈরি করেছি। এত কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি বলেই আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ২৬ শতাংশ। এই হার ভারতে ৬ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ১৪ শতাংশ। এটা এমনিতেই হয়নি। সবাই কাজ করেছে বলেই এটা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের মাত্র একটি টেস্টিং ল্যাব ছিলো। দেড় মাসে আমরা এখন ৬৮টি ল্যাব করেছি। দিনে মাত্র দেড়শ টেস্টের ব্যবস্থা ছিল, সেটা এখন ১৮ হাজারে উন্নীত হয়েছে। এটা এমনিতেই হয়নি। আমরা জানি, আমাদের আরও টেস্ট দরকার। আরও করলে ভালো হয়। কিন্তু কোটি কোটি লোককে টেস্ট করতে পারবেন না। এটা আমাদের মানতে হবে।
২০ কোটি টাকা ডাক্তারদের থাকা-খাওয়া ঢামেক হাসপাতাল সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক