Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ক্যাসিনোকাণ্ড: করোনায় স্থবির অনুসন্ধান ও তদন্ত


১ জুলাই ২০২০ ২২:৫৫

ঢাকা: গত বছরের সেপ্টেম্বরে শুরু হয় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। ক্যাসিনোকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকের নাম তখন বেরিয়ে আসতে থাকে। চলতে থাকে টানা অভিযান। এরপর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শুদ্ধি’ অভিযান শুরুর পর দুদক প্রথমে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। সে অনুসন্ধানের তালিকায় এখন রয়েছে দুই শতাধিক ব্যক্তির নাম। এরই মধ্যে ২২টি মামলাও করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়েছে ক্যাসিনো মামলার অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম।

বিজ্ঞাপন

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ক্যাসিনো মামলার অনুসন্ধান ও তদন্ত টিমের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে ক্যাসিনোকাণ্ডের অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম স্থবির রয়েছে। কেননা করোনার সময়ে কাউকে তলব করা যাচ্ছে না। আবার মামলা অনুসন্ধান বা তদন্তের জন্য দুদকের কর্মকর্তারা বাইরেও যেতে পারছেন না। করোনা পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেটাও বলা যাচ্ছে না। ফলে ক্যাসিনোবিরোধী তদন্ত কার্যক্রমে স্বাভাবিক গতি নেই।

এদিকে, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িতদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু তথ্য পাওয়া গেলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও নতুন করে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ফলে অনুসন্ধানের ওই অংশটিও স্থবির হয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগ পর্যন্ত দুদকের হাতে ক্যাসিনোকাণ্ড নিয়ে যেসব তথ্য ছিল, সংক্রমণ শুরুর পর আর কোনো তথ্য সংস্থাটি পায়নি।

এর মধ্যে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে মে মাসের শেষ পর্যন্ত দুদক বন্ধই ছিল। স্বাভাবিকভাবেই এই সময়ে দুদকের কর্মকর্তারা ক্যাসিনো নিয়ে তেমন কোনো কাজ করতে পারেননি। এরপর জুনে দুদকের কার্যক্রম ফের শুরু হলেও সংশ্লিষ্ট অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সাড়া মেলেনি। ফলে ফলে পুরনো তথ্য নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে তদন্ত কর্মকর্তাদের। তাতে অগ্রগতি আসেনি তেমন একটা। সূত্র বলছে, এখনো ক্যাসিনোকাণ্ড অনুসন্ধানে কোনো গতি নেই। ঢিলেঢালাভাবে কাজ চলছে।

তবে ক্যাসিনোরকাণ্ডের অনুসন্ধান ও তদন্তের টিম লিডার দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন অবশ্য সে অভিযোগ স্বীকার করলেন না। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, করোনার কারণে আমরা গত তিন মাস কোনো কাজ করতে পারিনি। এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে। তথ্য পেলে বাকিদের বিরুদ্ধে দ্রুতই মামলা করা হবে। আমাদের কাজ এখন দ্রুত গতিতে চলছে।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ‘বিতর্কিত’দের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এ জন্য পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। এই টিমটিই ক্যাসিনো নিয়ে কাজ করছে।

এর আগে, সেপ্টেম্বরে শুদ্ধি অভিযান শুরুর প্রথম দিনই রাজধানীর ইয়াংমেনস ফকিরাপুল ক্লাব থেকে গ্রেফতার হন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক (পরে বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। এরপর বিভিন্ন অভিযানে একে একে গ্রেফতার হন কথিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি (বহিষ্কৃত) ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট, তার সহযোগী এনামুল হক ওরফে আরমান, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান, তারেকুজ্জামান রাজীবময়নুল হক মঞ্জু

দুদক পরে ২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠি পাঠায়। চিঠিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দেশে মানি লন্ডারিংসহ বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ আছে৷ এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

দুই সংসদ সদস্য ছাড়াও গণপূর্ত অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হাই, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান (মিজান), গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তার ভাই গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রুপন ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী কাজী আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ ও লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার স্ত্রী নাবিলা লোকমান, এনামুল হক এনুর সহযোগী ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ, রাজধানীর কাকরাইলের জাকির এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. জাকির হোসেন ও সেগুনবাগিচার শফিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. শফিকুল ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট এনামুল হক এনু এনু-রুপন ক্যাসিনো ক্যাসিনোকাণ্ড ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া জি কে শামীম দুদক দুর্নীতি দমন কমিশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর