‘শ্রমিকদের ঠকানো হবে না, ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে’
৩ জুলাই ২০২০ ১৩:১৪
ঢাকা: পাটকল শ্রমিকদের প্রত্যেককে তাদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। প্রধানমন্ত্রী নিজেই শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে এ নিয়ে আর ভাবনার কিছু নেই বলেও জানান তিনি।
পাটমন্ত্রী বলেন, এটা সরকারি টাকা। মাঝখানে কেউ নেই। এখানে কোনো দালাল নেই। টাকা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি চলে যাবে। শ্রমিকরা কী পাচ্ছে আর পাচ্ছে না, সেটা আপনারা নিজেরাই জানতে পারবেন।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর আধুনিকায়নে উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত
শুক্রবার (৩ জুলাই) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন করে বললেন, শ্রমিকরা তো আমাদেরই লোক, এদেরকে ঠকানো যাবে না। প্রধানমন্ত্রী পাটকে ভালোবাসেন। এই পাট আবার এগিয়ে যাবে। তাই এই শ্রমিক ভাইদের আমরা কোনোভাবেই ঠকাব না। তাদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, পুরনো টেকনোলজি দিয়ে মাসের পর মাস আমাদের কারখানা টিকতে পারবে না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন কথা হলো, তখন তিনি বললেন, এই শ্রমিক ভাইয়েরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আন্দোলন করেছে। ১ লাখ শ্রমিক যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর মায়া আছে। শ্রমিক ভাইয়েরা সবসময় আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাদের আত্মত্যাগের কথা আমরা ভুলিনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, আজ এই শ্রমিকদের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে যেখানে এই শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন, সেখানে ভাবনার কিছু নেই। আমি আবারও বলছি, প্রধানমন্ত্রী যখন শ্রমিকদের দায়িত্ব নিয়েছেন, সুতরাং এখানে ভাববার বিষয় নেই। প্রধানমন্ত্রী যখন দায়িত্ব নিয়েছেন, শ্রমিকরা ভালো থাকবেন, শান্তিতে থাকবেন— এটা আমার বিশ্বাস। শ্রমিকদের পাওনা নিয়ে অনেকেই দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন। তবে এখন আর কোনো দ্বিধা নেই।
শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, শ্রমিকদের যা পাওনা রয়েছে, আমরা সেটা অর্ধেক নগদ টাকা ও অর্ধেক সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করব। এতে করে তাদের সঞ্চয়ও হবে। সঞ্চয়পত্র থেকে তিন মাস পর পর মুনাফা পাবেন তারা।
প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের সূত্র ধরে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান, মজুরি কমিশন-২০১৫ অনুযায়ী পাটকল শ্রমিকদের এ বছরের জুন মাসের মজুরি আগামী সপ্তাহে তাদের ব্যাংক হিসাবে পরিশোধ করা হবে। নোটিশ মেয়াদ, অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ৬০ দিনের মজুরিও দুই মাসে যথারীতি পরিশোধ করা হবে। পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ অবশিষ্ট সব পাওনার ৫০ শতাংশ শ্রমিকদের নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এবং বাকি ৫০ শতাংশ নিজ নিজ নামে সঞ্চয়পত্র আকারে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। সব ক্ষেত্রেই মজুরি কমিশন-২০১৫-এর ভিত্তিতেই পাওনা হিসাব করা হবে।
পাটমন্ত্রী আরও জানান, পিপিপি’র আওতায় পাটকলগুলো আবার চালু হলে সেখানে পুরনো শ্রমিকদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের জন্য ব্যাংক হিসাব নম্বর অবিলম্বে বিজেএমসিকে জানাতেও অনুরোধ জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম ও বিভিন্ন শ্রমিক নেতাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন-
মন্ত্রীকে পাটকল শ্রমিকদের ধন্যবাদ, মন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীকে
‘১৫ দিনের মধ্যে পাটকল শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন’
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর ঘোষণায় পাটকল শ্রমিকদের অনশন প্রত্যাহার
বাজেটের টাকা ছাড় হলেই পাটকল শ্রমিকরা বকেয়া বুঝে পাবে: পাটমন্ত্রী
গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক পাটকল বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের পাওনা