বেড়েই চলছে ধরলার পানি, কুড়িগ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন
৩ জুলাই ২০২০ ১৯:৪৪
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে আবারও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন বন্যা কবলিত মানুষেরা। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধরলা বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ধরলার পানি বাড়তে থাকায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই বাঁধের প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী প্রায় ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
অন্যদিকে, ব্রহ্মপুত্রের পানি সামন্য কমে চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, মূলত উজানের ও স্থানীয় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ধরলার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আর ভারী বৃষ্টিপাত না হলে ধরলার পানি আর তেমনটা বৃদ্ধি পাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপরে থাকা অবস্থায় আগামী ৩ থেকে ৪ দিন পর পানি আবারও বৃদ্ধি পাবে।
এমনিতেই এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নদ-নদীর অববাহিকার প্রায় আড়াই শতাধিক চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে রয়েছে। বন্যা আরও দীর্ঘায়িত হলে চরম সংকটে পড়তে হবে বানভাসীদের।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি জীবনযাপন করছে। এদের মধ্যে শ্রমজীবী পরিবারগুলোর হাতে কোনো কাজ না থাকায় খাদ্য সংকট তীব্র হচ্ছে। এই সাড়ে তিন হাজার পরিবারের মধ্যে মাত্র সাড়ে ৩০০ পরিবারকে সরকারি খাদ্য সহায়তা দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রাপুর ইউনিয়নের গারুহারা, বলদিয়া গ্রামসহ নদ-নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মাইনুদ্দিন ভোলা জানান, যাত্রাপুর ইউনিয়নের বলদিয়া এলাকায় গত কয়েক দিনের ভাঙনে চরম দুর্ভোগে রয়েছে ঘর-বাড়ি হারানো কয়েকটি পরিবার। একদিকে বন্যা অন্যদিকে ভাঙনে তারা অবর্ণনীয় কষ্টে দিন পার করছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, জেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে আরও ১০০ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবারের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
টপ নিউজ ধরলা ধরলায় পানি বৃদ্ধি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বাঁধে ভাঙন