ফেনীতে বাঁধ ভেঙ্গে ১৫ গ্রাম প্লাবিত, প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ
১৪ জুলাই ২০২০ ২০:২৮
ফেনী: ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর দুই তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে প্রতিবছরই ভাঙন দেখা দেয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের। বন্যা থেকে রক্ষা পেতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলেও প্রতিবছর তা ভেঙ্গে যায়। বন্যা নিয়ন্ত্রণে স্থায়ী কোন উদ্যোগ না নেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। একইসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ভারী বর্ষণ হলেই ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে ফেলে। প্রতিবছর এই বাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলের মাঠসহ ভেসে যায় পুকুরের মাছও। এ বছরের শুরুতেই মুহুরী নদীর ৯ টি স্থানে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ১৫টি গ্রাম। সোমবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি দেখা গেছে। ভাঙন স্থানগুলো দিয়ে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণে ফেনীর ফুলগাজী,পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ২০০৫ থেকে ২০১১ সালে নির্মিত হয়েছে ১’শ ২২ কিলোমিটার বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ। এতে ব্যয় হয়েছে ১’শ ৫৫ কোটি টাকা। নদীর দু’তীরে ১’শ ২২ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটার রয়েছে নদীর খুব তীরবর্তী। যা এই বাঁধ ভাঙ্গার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম মজুমদার ও নুরুল ইসলাম বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণের পরও প্রতিবছরই এই বাঁধের একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। বেড়িবাঁধ ভাঙার কারণ হলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতা। এই বাঁধ নদী থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক মো. নাছির উদ্দিন জানান, জমি অধিগ্রহণ করার সময় স্থানীয়রা বাধা দেয়ায় বাঁধ নদী থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়া যায়নি। যার কারণে বাঁধ ভেঙেছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন শীঘ্রই পাওয়া যাবে। কারিগরি কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। একনেকে অনুমোদনের পর বাস্তবায়িত হবে। বাঁধ সংস্কারে কর্মকর্তাদের কোনো গাফিলতি নেই।
ফেনী জেলা প্রশাসক বলেন, টেকসই বাঁধ না হওয়ার কারণে বেঁডিবাধ ভেঙে যায়। নদীর বাঁকগুলো সংস্কার করা দরকার। প্রতিবছরই এমন ক্ষতি হচ্ছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে কাজ করে স্থায়ী সমাধান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।