বিপদসীমার ওপরে পানি, সিরাজগঞ্জের বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ চরমে
১৫ জুলাই ২০২০ ১৮:৩৭
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। ফলে নতুন করে আরও অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলায় প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ।
বুধবার (১৫ জুলাই) সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ডপয়েন্ট এলাকায় পানি ৩৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৮ ও কাজিপুর উপজেলা পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জেলার বন্যার অবস্থার অবনতি হয়েছে। পানি বাড়ার কারণে প্রতিদিনই নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি এবং ফসলি জমি। পানিবন্দি অনেক মানুষ বাঁধ ও উঁচু স্থানে ঝুপড়ি ঘর তুলে বাস করছেন। পানি বাড়ায় নদী-তীরবর্তী কাজিপুর উপজেলার ক্ষুদবান্ধি, সিংড়াবাড়ি ও শাহজাদপুর উপজেলায় ভাঙ্গন বেড়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার শিমলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে করা শিমলা স্পারের প্রায় ৫০ মিটার পাকা কংক্রিট অংশ সোমবার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় এক মাসের ব্যবধানে তিনবার ধসে পড়লো স্পার।
জেলার প্রায় ৮০ কিলোমিটার বাঁধের ওপর ভাঙ্গনের ঝুঁকি ঠেকাতে ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে সদর, কাজীপুর ও এনায়েতপুরে ১১টি স্পার ও গ্রোয়েন নির্মাণ করা হয়। সময় মতো রক্ষণাবেক্ষণ না করায় অধিকাংশই দুর্বল হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজিপুর, সদর ও শাহজাদপুরের কয়েকটি স্থানে নতুন করে ভাঙ্গনও বেড়েছে।
বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৪০টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও এক হাজার ৬৮০টি ঘরবাড়ি আংশিক, তিন হাজার ৫৫০ হেক্টর ফসলি জমি, ৩০টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ও পাঁচটি আংশিক, ৩ কিলোমিটার রাস্তা ও বাঁধ সম্পূর্ণ এবং ৭ কিলোমিটার আংশিক, তিনটি ব্রিজ ও কালভার্ট সম্পূর্ণ ও সাতটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৩৫টি ইউনিয়নের ২৪০টি গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার পরিবারের এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুুর রহিম জানান, বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৬৭ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২৫৮ টন জিআর চাল, সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা, গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ ও শিশুখাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা এবং ৩০ হাজার শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।