টাঙ্গাইলে শাহজাহান সিরাজের জানাজা অনুষ্ঠিত, দাফন বনানী কবরস্থানে
১৫ জুলাই ২০২০ ১৭:৫৭
টাঙ্গাইল: মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান সিরাজের প্রথম ও দ্বিতীয় জানাজা তার জন্মস্থান টাঙ্গাইলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা শেষে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বুধবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১টায় টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গায় সরকারি শামসুল হক কলেজ মাঠে শাহজাহান সিরাজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুপুর ২টায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় কালিহাতী কলেজ মাঠে।
আরও পড়ুন- শাহজাহান সিরাজ আর নেই
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী জানাজায় অংশ নেন। এর আগে শাহজাহান সিরাজের মরদেহ ঢাকা থেকে এলেঙ্গা পৌঁছালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ জনগণ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উপস্থিত মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের কথা স্মরণ করেন।
দীর্ঘ দিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার (সাবেক অ্যাপোলো) হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শাহজাহান সিরাজ। বর্ণাঢ্য এই রাজনীতিবিদের জন্ম ১৯৪৩ সালের ১ মার্চ, টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার বেতডোবাতে। শাহজাহান সিরাজ স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘চার খলিফা’ হিসেবে পরিচিত চার ছাত্রনেতার একজন। মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন তিনি।
আরও পড়ুন- শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
একাত্তরের ৩ মার্চ রাজধানীর পল্টন ময়দানে এক বিশাল ছাত্র জনসভায় স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন শাহজাহান সিরাজ। ওই সময় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর আগেই তুখোড় ছাত্রনেতা হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন রাজনৈতিক অঙ্গনে। ষাটের দশকের বঙ্গের আলীগড়খ্যাত টাঙ্গাইলের করটিয়ার সরকারি সা’দত কলেজের ছাত্রসংসদের দুই মেয়াদের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গড়ে তোলার পেছনেও অন্যতম ভূমিকা ছিল তার।
আরও পড়ুন- শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুতে জাতির অন্তরাত্মায় ক্ষত হলো— আ স ম রব
জাসদের হয়েই সংসদে টাঙ্গাইল-৪ আসনের (কালিহাতী) প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিন বার। পরে ১৯৯৫ সালে বাম ঘরানার রাজনীতির গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যোগ দেন বিএনপিতে। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনেও একই আসন আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে শাহজাহান সিরাজকে বন ও পরিবেশমন্ত্রী করা হয়। পরিবেশ রক্ষা ও বায়ু দূষণ কমাতে পলিথিন ও টু-স্ট্রোক অটোরিকশা নিষিদ্ধ করেছিলেন তিনিই। সবশেষ বিএনপিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন সিরাজ।
শিক্ষানুরাগী হিসেবে কালিহাতী উপজেলা সদরে কালিহাতী শাহজাহান সিরাজ কলেজসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে রাজিব সিরাজ শুভ এবং এক মেয়ে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন-
শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুতে বঙ্গবীরের শোক
শাহজাহান সিরাজের মরদেহে বিএনপির শেষ শ্রদ্ধা
শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলের শোক
শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুতে ড. কামাল হোসেনের শোক
শাহজাহান সিরাজের মৃত্যুতে সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের শোক
জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধের ইশতেহারের পাঠক শাহজাহান সিরাজ শাহজাহান সিরাজের মৃত্যু সাবেক মন্ত্রী