রাতভর বৃষ্টি, ডুবে থাকা ঢাকায় অস্বস্তি
২০ জুলাই ২০২০ ১৩:২৬
ঢাকা: রাতভর কখনও হালকা, কখনও মাঝারি আবার কখনও মুষলধারে বৃষ্টির শব্দে ক্লান্তির ঘুমে ছিল স্বস্তির নিঃশ্বাস। কিন্তু সকালে ঘরের বাইরে বের হওয়া অফিসগামী ও কর্মমুখী মানু্ষদের কাছে সেই স্বস্তি একেবারেই যেন পরিণত হল অস্বস্তিতে।
রাজধানীতে সোমবার (২০ জুলাই) মধ্যরাত থেকে সকাল প্রায় ৯টা পর্যন্ত থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে। সামান্য এ বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে কর্মব্যস্ত নগরবাসী একদিকে যেমন চলাচলে অন্তহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। অন্যদিকে দুর্ভোগের সুযোগ নিয়ে রিকশা, সিএনজি চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে মেতে উঠেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, রাতভর বৃষ্টিতে রাজধানীর হাজারীবাগ, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি ১৫, মোহাম্মদপুরের বছিলা রোড, আরামবাগ, খিলগাঁও, পুরান ঢাকার শহীদনগর, নাজিমউদ্দিন রোড, জুরাইন, মিরপুরের কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, ইব্রাহীমপুর, সাংবাদিক কলোনি এলাকাসহ প্রায় অধিকাংশ এলাকার প্রধান সড়কসহ অলিগলির বিভিন্ন স্থানে হাঁটুসমেত পানি জমে আছে। শুধু তাই নয়, মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারেও জমে আছে হাটু সমেত পানি। এতে যানবাহনে দেখা দিয়েছে ধীর গতি। ফলে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।
তবে বেলা যত বাড়ছে, ততই কমতে শুরু করেছে অনেক এলাকায় জমে থাকা পানি। আবার কোথাও কোথাও ড্রেনেজ ত্রুটি থাকায় সেগুলো মেরামত করতে দেখা গেছে সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার কর্মীদের।
পান্থপথ মোড়ে ড্রেনের ঢাকনা জ্যাম হওয়ায় ৫ ঘণ্টা পরও হাটু পানি থাকায় সেটি মেরামত করছেন ওয়াসার কর্মীরা। এ বিষয়ে ওয়াসার কর্মী রিয়াদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ময়লা আবজর্নায় জ্যাম হয়ে গেছে। সেগুলো পরিষ্কার করতেছি। পরিষ্কার হয়ে গেলেই পানি নেমে যাবে।’
তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে বর্ষার মাঝেই খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। যে কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দকে ভরা জলাবদ্ধ সড়কে চলাচলে রীতিমতো নাকাল হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। তারা বলছেন, সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি করোনা প্রাদুর্ভাবে বিপর্যন্ত নগরবাসীর জন্য বাড়তি আতঙ্ক। এ ভোগান্তি অব্যাহত থাকলে মানুষের দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
মগবাজার এলাকার বাসিন্দা রশিদুর রহমান হৃদয় সারাবাংলাকে বলেন, এলাকার অলিগলির সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। তাই গত দুমাস ধরে নাকাল অবস্থা আমাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, আমরা জলাবদ্ধতা নিরসনে আগের চিহ্নিত স্পটগুলোতে কাজ করেছি। এখন যেটি হবে তা হল বৃষ্টি হলে পানি জমবে। তবে তা স্থায়ী হবে না। অর্থাৎ পানি সরে যেতে যতক্ষণ সময় লাগবে ততক্ষণ। এর বেশি না। হয়ত আধা-ঘণ্টা কিংবা এক থেকে দেড় ঘণ্টা। এর মধ্যেই পানি সরে যাবে। তাছাড়াও যদি কোন এলাকায় এর বেশি সময় পানি জমে থাকে তবে সেসব এলাকা চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে কোনো গাফলতি বরদাস্ত করা হবে না।
একই কথা বললেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহ মো. এমদাদুল হক। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এলাকাগুলোতে এখন যে জলাবদ্ধতা হবে বা হচ্ছে তা দীর্ঘস্থায়ী নয়। হয়তো কোথাও ড্রেনেজ সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দিয়েছে বা ময়লা জমে গেছে। সেসব ক্ষেত্রে পানি জমতে পারে। তবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’