ভারতের নয়া নীতি: টার্গেট চীন-পাকিস্তান
২৫ জুলাই ২০২০ ০১:৪৬ | আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ১২:০৬
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সম্পর্ক আছে এমন প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে নয়া বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটির কেন্দ্র সরকার। জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি’র কারণ দেখিয়ে দেশটির সাধারণ আর্থিক বিধিমালা – ২০১৭ সংশোধন করে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের এক সরকারি প্রজ্ঞাপণে বলা হয়, দেশটির সঙ্গে স্থলসীমান্ত আছে এমন কোনো দেশের ঠিকাদাররা যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পূর্ব নিবন্ধন ছাড়া সরকারি পণ্য ও সেবা সরবরাহের নিলামে অংশ নিতে পারবে না। নিলামে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে, কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় সরঞ্জাম সরবরাহ এবং ঋণ সহযোগিতা বা উন্নয়ন সহযোগিতার আওতায় থাকা প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো (নেপাল, ভূটান, মিয়ানমার, বাংলাদেশ) এর আওতামুক্ত থাকবে।
এর ফলে, চীন ও পাকিস্তান ছাড়া ভারত সীমান্তবর্তী অন্য কোনো দেশ নতুন এই বাণিজ্যনীতির কারণে বিধিনিষেধের মুখে পড়বে না।
এ ব্যাপারে কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, চীনের নাম সরাসরি উল্লেখ করলে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) আপত্তি উঠতে পারে। তাই, নয়া এই বাণিজ্যনীতিতে কৌশলে সীমান্তবর্তী দেশের কথা বলে, কার্যত চীন ও পাকিস্তানকে যে টার্গেট করা হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
এদিকে, নতুন এই বিধিনিষেধ আরোপ করে পণ্য বা সেবা সরবরাহের নিলাম প্রক্রিয়ায় চীনা কোম্পানিগুলির অংশ নেওয়ার পথ বন্ধ করে দিল মোদি’র সরকার – এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
অন্যদিকে সরকারি প্রেসনোটে বলা হয়েছে , সব নতুন নিলামের ক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। ইতোমধ্যেই আহ্বান করা দরপত্রগুলোর মধ্যে যেগুলোর প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের ধাপ পার হয়নি- সেগুলোও অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। আর যেগুলো প্রাথমিক বাছাই হয়েছে সেগুলো সাধারণভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে। নতুন করে আবার পুরো প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তবে, বেসরকারি কার্যাদেশের নিলাম এই বিধিনিষেধের আওতায় পড়বে না।
প্রসঙ্গত, লাদাখ সীমান্ত নিয়ে চীনের সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ হিসেবে এর আগে বেশ কিছু চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ভারত। চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার। যেখানে ২০১৯ সালে চীন ভারত থেকে সাত হাজার কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। অন্যদিকে, ভারত চীনে রফতানি করেছে মাত্র দুই হাজার কোটি ডলারের পণ্য।