‘আমি মাস্ক-পিপিই পরেছি, দেশকে করোনামুক্ত করতে আপনারাও পরুন’
২৮ জুলাই ২০২০ ১৯:১৯
নারায়ণগঞ্জ: করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে নিজে মাস্ক ও পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্চাম) পরার পাশাপাশি অন্যদেরও এগুলো পরতে আহ্বান জানিয়েছেন গাজী গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা।
কাভারঅল পিপিই-মাস্ক-ফেস শিল্ড পরিহিত অবস্থায় পাপ্পা গাজী বলেন, অনেকেই বলতে পারেন— এভাবে পিপিই-মাস্ক পরে শরীর ঢেকে কে এসেছেন! কিন্তু এগুলো পরার পেছনে কারণ আছে। প্রথমত, আমি একজন বাবা। আমি বাইরে যাব, করোনাভাইরাস নিয়ে ঘরে ফিরব, আমার সন্তান করোনায় আক্রান্ত হবে— এটা তো আমি চাই না। আমি পরেছি, আপনারাও পরুন। কারণ আপনাদের ঘরেও স্ত্রী-সন্তান আছে। আপনাদের মাধ্যমে তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ুক— এটা নিশ্চয় চাইবেন না। আর এগুলো পরার দ্বিতীয় কারণ হলো আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। আর আমরা যদি মাস্ক না পরি, দেশকে করোনা থেকে মুক্ত রাখতে পারব না।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকার গাজী ভবনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীকের ঐচ্ছিক তহবিল থেকে রূপগঞ্জের দরিদ্র ৩২১ জনকে ৫ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক বিতরণের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে যেকোনো মূল্যে করোনাভাইরাস দূর করতে হবে বলে জানান গাজী গোলাম মর্তুজা। তিনি বলেন, আমি চাই আমার রূপগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন হোক। সেই লক্ষ্যেই আমার বাবা গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক কাজ করে যাচ্ছেন। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আমাদের রূপগঞ্জ উপজেলায় ৯৮ ভাগ ঘরে গ্যাসের চুলা জ্বলে। এটা আমাদের মন্ত্রী মহোদয় নিজে উদ্যোগ নিয়ে করেছেন। এইভাবে আমরা যেভাবে উন্নয়ন আগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলেছি, একে ঠিক রাখতে আমাদের যেকোনো মূল্যে করোনাভাইরাসকে দূর করতে হবে।
মেয়েদের প্রতি নিজের এবং বাবা বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর বিশেষ মমতার কথা তুলে ধরে গাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহে আমার বাবা সবকিছুই পেয়েছেন। স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। তবে আল্লার কাছের তার একটাই আফসোস, আল্লাহ তাকে কোনো মেয়ে দেননি। এ কারণেই তিনি মেয়েদের নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসেন। শুধু আমার বাবা নয়, আমার নিজেরও মেয়ে নেই। কিন্তু আমরা চাই, মেয়েরা এগিয়ে আসুক। তারা এগিয়ে গেলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। করোনাকালে দেশবাসী এর সুফল ভোগ করছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সবার সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। জানুয়ারিতে আমার এক বন্ধু এসেছিলেন বিদেশ থেকে। তিনি আমাকে বলেছিলেন, এটা হলো কিভাবে? আমি তাকে বলেছিলাম, এটার নাম শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ। তার সুযোগ্য সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এটা করেছেন।
গোলাম মর্তুজা পাপ্পা বলেন, ঈদুল আজহা আসছে। এটা আমাদের সবার আনন্দের দিন। আমরা আনন্দ করব, কিন্তু সচেতনভাবে। আমাদের সন্তানদের ঘরের মধ্যে রাখার চেষ্টা করব। আমি সত্যিই ভয়ে আছি। কারণ আমাদের রূপগঞ্জসহ সারাদেশেই করোনা সংক্রমণ এখন নিচের দিকে আছে। কিন্তু ঈদের মধ্যে যদি আমরা অসচেতন হই, তাহলে করোনার সংক্রমণ বাড়বে। আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব না। যতদিন টিকা আবিষ্কার না হয়, ততদিন আপনারা সচেতন থাকুন।
সবাইকে ফের মাস্ক-গ্লাভস পরার আহ্বান জানিয়ে গাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, উন্নয়ন আগ্রযাত্রাকে ঠিক রাখতে আমাদের যেকোনো মূল্যে করোনাভাইরাসকে দূর করতে হবে। আর দূর করার একটাই ওষুধ— মাস্ক পরুন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। কারণ করোনার কোনো ওষুধ নাই।
অনুষ্ঠানে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহজাহান ভুঁইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, উপজেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শীলা রানী পাল, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিনা আক্তার রিতাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার খাদুন এলাকায় তারাবো পৌরসভা কাযালয়ে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত কিন্ডার গার্টেন স্কুলগুলোতে তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজীর উদ্যোগে অনুদান দেন গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা।
অনুদান বিতরণ গাজী গোলাম মর্তুজা গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী রূপগঞ্জ