ওড়ানো যাবে ৭ কেজির কম ওজনের ড্রোন, ঈদের পর নীতিমালা
২৯ জুলাই ২০২০ ১৩:৩১
ঢাকা: বিনোদনের কাজে সাত কেজির কম ওজনের ড্রোন ওড়াতে পারবে যে কেউ। তবে স্থিরচিত্রধারণ বা পেশাদার কাজের জন্য ড্রোন উড়াতে লাগবে সিভিল অ্যাভিয়েশনের অনুমতি। ঈদের পরই ড্রোনের এমন নীতিমালা মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের জন্য উথাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
নীতিমালা চূড়ান্তের আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে মতামত নেওয়া শেষ হয়েছে। এরপর এখন এটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে শেষ ধাপে রয়েছে বলেও জানিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
ড্রোন নীতিমালা-২০২০ মন্ত্রীসভায় অনুমোদন পেলে এটিই হবে বাংলাদেশে ড্রোন ব্যবহারকারীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ একটি নীতিমালা।
মঙ্গলবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সিএ) জনেন্দ্র নাথ সরকার সারাবাংলাকে জানান, নীতিমালা চূড়ান্ত করার কাজ শেষ। এখন ভাষাগত দিক দেখার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তাও মাস দেড়েক হয়ে গেছে। সেখানে খোঁজ নিয়ে শিগগিরই এটি মন্ত্রীসভায় পাশের জন্য উপস্থাপন করা হবে। খুব সম্ভবত ঈদের পর মন্ত্রীসভায় এটি উথাপন করা হবে।
নীতিমালায় বল হয়েছে, বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কেপিআই) তিন কিলোমিটারের বাইরে ৫০ ফুটের কম উচ্চতায় এবং সাড়ে তিন কিলোমিটারের বাইরে ১০০ ফুটের কম উচ্চতায় সাত কেজির কম ওজনের ড্রোন ওড়াতে অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
অন্যসব ক্ষেত্রে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অনুমতি নিয়ে ড্রোন ওড়াতে হবে। সাত কেজির বেশি ওজনের ড্রোন আমদানিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।
শিক্ষা ও গবেষণার কাজে এবং ছবি ও ভিডিও ধারণ কাজে ব্যবহৃত ড্রোন চালাতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচকক) নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে নিবন্ধন নিয়ে একটি পরিচিতি নম্বর নিতে হবে।
তবে বিনোদনের উদ্দেশ্যে ড্রোন ১০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় উড্ডয়ন ক্ষমতাসম্পন্ন হলে অথবা সাত কেজির বেশি ওজনের হলে ওই ড্রোনেরও নিবন্ধন নিতে হবে।
নীতিমালা কার্যকর হলে বেবিচককে দেশে থাকা প্রতিটি ড্রোনের নিবন্ধন ও পরিচিতি নম্বর এবং কে ব্যবহার করছে তা সংরক্ষণ করতে হবে।
২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে ড্রোন উড়ানোর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর অনুমতি লাগে৷ এই অনুমতির আবেদন করতে হয় বেবিচকের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন বিভাগে৷ তবে ব্যক্তি পর্যায়ে আবেদন করে অনুমতি পাওয়ার কোনো নজির নেই৷ আর ড্রোন আমদানির ব্যাপারে কোনো নীতিমালাও নেই৷
সরকারি সংস্থা মেট্রোরেল কতৃপক্ষ জানায়, তারা বেশ কয়েকটি জঠিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে একবার ড্রোন উড়ানোর অনুমতি পেয়েছিল।
জঠিল প্রক্রিয়ার কারণে অনেকে ড্রোন উড়াতে অনুমতির ধার ধারেন না। খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিক তাদের পেশাগত কাজে অহরহ ড্রোন ব্যবহার করছেন।
নীতিমালা পাশ হওয়ার আগ পযন্ত ড্রোন উড়ানোর ছয় ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চায় সিভিল অ্যাভিয়েশন। বাস্তবে এসব কাগজপত্র এখনো দেওয়ার জন্য কোনো কতৃপক্ষ নেই।
সিভিল অ্যাভিয়েশনের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন ডিভিশনের ডেপু্টি ডিরেক্টর জাহিদ কাইয়ুম সারাবাংলাকে জানান, ইন্সুরেন্স, ড্রোন পাইলটের বায়োডাটা, ড্রোন অপারেটিংয়ের লাইসেন্স, ড্রোন অপারেট এরিয়ার গুগল ম্যাপ, ড্রোন উড্ডয়নের সবোচ্চ উচ্চতা এবং ড্রোনের ছবি।
এসব কাগজপত্র পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণলয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন ডিভিশনের ডেপু্টি ডিরেক্টর জাহিদ কাইয়ুম।