বিরোধীদল ঘর থেকে বের হয় না, টেলিভিশনে উঁকি দেয়: তথ্যমন্ত্রী
৩ আগস্ট ২০২০ ১৮:৫৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিরোধীদল অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে টেলিভিশনে উঁকি দিয়ে সরকারের সমালোচনা করে অথচ ঘর থেকে বের হয় না। আমরা একদিনও ঘরে বসে ছিলাম না। জনগণের পাশে থাকতে গিয়ে আমাদের অনেক নেতা-মন্ত্রী, সংসদ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন। সংকট মোকাবিলায় জনগণের পাশে থাকার শিক্ষা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতামতকে ভুল প্রমাণ করে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারলে করোনার মতো দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব।’
সোমবার (৩ আগস্ট) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) নির্বাহী কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন ক্যাটাগরির সাংবাদিকদের সহায়তা দেওয়ার জন্য আমাকে নির্দেশনা দেন। সাংবাদিকদের মধ্যে যারা বেতন পাচ্ছে না, যারা চাকরিচ্যুত কিংবা দীর্ঘদিন ধরে বেকার তাদের যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য এককালীন সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা প্রথম ধাপে সারাদেশে দেড় হাজার সাংবাদিককে অনুদান দিয়েছি। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কায়ও সাংবাদিকদের এ ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে না। সেখানে সহায়তা করা হচ্ছে শুধু যারা করোনায় মৃত্যুবরণ করেছে তাদেরকে।’
‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে প্রথম মাসে সবকিছু বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে অনেককিছু খুললেও এখনো অনেক কিছু খোলেনি। কিন্তু সাংবাদিকদের কাজকর্ম কখনো বন্ধ ছিল না। সাংবাদিকরা এই করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছে। সংবাদ সংগ্রহ করেছে, সংবাদ পরিবেশন করেছে, যে কারণে পত্রিকা বের হয়েছে, টেলিভিশনে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। সাংবাদিক ভাইবোনেরা যদি এভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ না করতো তাহলে পত্রিকায় ও টেলিভিশনের সংবাদ পরিবেশন করা সম্ভবপর হতো না। এর জন্য বহু সাংবাদিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে আমি তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হিসেবে শুরু থেকেই সংবাদপত্র টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ার মালিকদের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, যাতে সাংবাদিকদের বেতন ভাতা ঠিকমতো দেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের কারণে এমন কোনো সেক্টর নাই নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। দুর্যোগের সময় আমাদের অসুবিধা হলেও আমি সমস্ত গণমাধ্যমের কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো সাংবাদিকদের বেতন ভাতা যতটুকু সম্ভব সঠিকভাবে যেন পরিশোধ করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্র এবং গণমাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। যখন কাজের ত্রুটি হয় সেটি অবশ্যই গণমাধ্যম উঠে আসবে। যখন কাজ ভাল হয় তখন সেটিও গণমাধ্যমে উঠে আসা প্রয়োজন। পান থেকে চুন খসলেই হৈ হৈ রৈ রৈ করা উচিৎ নয়।’
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। এসময় সিইউজের পক্ষ থেকে তথ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
সিইউজের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর করোনা ভাইরাস মোকাবেলাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামের প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী। এসময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ, জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন ও সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই