অর্থবছরের শুরুতেই ইতিবাচক ধারায় রফতানি, জুলাইয়ে আয় ৩৯১ কোটি ডলার
৫ আগস্ট ২০২০ ১৩:৩৫
ঢাকা: করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নতুন অর্থবছরের শুরুতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পণ্য রফতানি আয়। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে পণ্য রফতানি করে ৩৯১ কোটি ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরের জুলাইয়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। এই অংক লক্ষ্যের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম। তবে তৈরি পোশাকে রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও প্রবৃদ্ধি কমেছে। জুলাই মাসে আয় এসেছে ৩২৪ কোটি ডলার। এছাড়া কৃষি, পাট, রসায়ন ও প্রকৌশলসহ অধিকাংশ খাতে পণ্য রফতানি আয় বেড়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সবশেষ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এরমধ্যে জুলাই মাসে রফতানি আয় এসেছে ৩৯১ কোটি ৯ লাখ ডলার। আগের বছরে এই মাসে রফতনির পরিমাণ ছিল ৩৮৮ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। এ হিসাবেই প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এর আগে গত অর্থবছরের জুন মাসে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি করে ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। মে মাসে রফতানির পরিমাণ ছিল ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। গত এপ্রিলে এই রফতানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৫২ কোটি ডলার। মূলত গত মার্চ থেকে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ায় রফতানি আয় কমতে থাকে। কিন্তু এপ্রিল মাসে রফতানি আয় কম আসলেও এর পরের মাস থেকে আবার বাড়তে থাকে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই মাসে ৩২৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। আগের বছরের চেয়ে পোশাক রফতানি কমেছে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তবে লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। জুলাই মাসে নিট পোশাক রফতানি হয়েছে ১৭৫ কোটি ২ লাখ ডলারের। নিট পোশাকে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ওভেন পোশাক রফতানি হয়েছে ১৪৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। তবে লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ৪ শতাংশ।
এদিকে, জুলাই মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আয় এসেছে প্রায় ৯ কোটি ডলার। আগের বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমলেও রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থবছরটির জুলাইয়ে হিমায়িত চিংড়ি রফতানি করে বাংলাদেশ ৩ কোটি ১৭ ডলার আয় করেছে। রফতানির এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। এ খাতের লক্ষ্য ছিল ৩ কোটি ৪৯ ডলার। আগের অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণে কমে যায় কৃষি পণ্য রফতানি আয়। তবে নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে কৃষি পণ্য রফতানি আয়। জুলাই মাসে রফতানি আয় এসেছে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি।
মহামারিকালে রফতানি আয়ের নেতিবাচক প্রবণতার মধ্যেও আশা দেখিয়ে যাচ্ছে পাট পণ্যের রফতানি আয়। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাসে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে পাট রফতানিতে। জুলাই মাসে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৫ দমমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া ওষুধ রফতানিতেও রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।