Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনা প্রতিরোধে সরকার পিছিয়ে পড়েছে: জি এম কাদের


৬ আগস্ট ২০২০ ০০:০৬

ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, ‘মহামারি করোনা প্রতিরোধে সরকার পিছিয়ে পড়েছে। শুরু থেকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। শুরুতেই কার্যকর পদক্ষেপ নিলে করোনা পরিস্থিতি এতদূর পর্যন্ত গড়াতে না।’

সম্প্রতি সারাবাংলা ডটনেটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজ যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে করোনা কতদিন থাকবে সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। ভ্যাকসিন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের করোনার সঙ্গে বাস করতে হবে। বর্তমানে দেশে সবার মধ্যে এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

বিজ্ঞাপন

জি এম কাদের বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে অনেকেই জীবিকা হারিয়েছেন, আবার কেউ কেউ হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন। দিনদিন এর সংখ্যা বাড়ছে। করোনার কারণে যারা জীবিকা হারিয়েছে তাদের ব্যাংক ঋণ দিতে হবে। দরিদ্র-হতদরিদ্র এবং মধ্য ও নিম্নবিত্তদের আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। অথবা এদের জন্য রেশনিং পদ্ধতি চালু করতে হবে ‘

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘করোনার শুরুতে সরকার কার্যক্রর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। করোনা শুরুর ২/৩ মাস পরে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাও কার্যকর নয় বলে আমি মনে করি। কারণ, লকডাউন দিয়ে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি চীন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো নয় যে, লকডাউন করে করোনা প্রতিরোধ করবে। এক্ষেত্রে সরকার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর দেশে লকডাউন জারি করা হলেও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। জনগণকে লকডাউন মানতে বাধ্য করতে পারেনি সরকার।’

বিজ্ঞাপন

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধের জন্য রাজধানীসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায় আক্রান্ত শনাক্তকরণের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। পাশাপাশি জনগণের মধ্য থেকে করোনা আতঙ্ক দূর করার জন্যও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার ছিল। যেমন: ঢাকাসহ সারাদেশে করোনা রোগী শনাক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া এবং এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো; এ জন্য রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; ঢাকাসহ জেলা-উপজেলার হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সাপ্লাই, আইসিইউসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা। সরকার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এসব পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আসলে এখন পর্যন্ত এসব পদক্ষেপের ধারে কাছেও নেই সরকার। আমি মনে করি, সরকারের উচিত ঢাকার প্রতিটি হাসপাতালে এবং জেলা-উপজেলায় করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা সরবরাহ করা। আর তা না হলে এই মহামারির কারণে আমাদের অনেক খেসারত দিতে হবে।’

সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ‘দেশের সবকিছু আজ স্থবির। কারণ জনগণের মধ্যে করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই জনগণের ভেতর থেকে করোনা আতঙ্ক দূর করতে হবে। সেজন্য মৃত্যুর হার কমাতে হবে। আর এ জন্য প্রয়োজন সারাদেশে করোনা চিকিৎসা জোরদার করা। করোনা চিকিৎসার জন্য যেসব সরঞ্জামাদি দরকার তা কিনতে বেশি টাকা খরচ হবে না। আর যদি খরচ হয়ও, তা করতে হবে। আগে দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে। দেশের মানুষের মধ্যে যখন আতঙ্ক থাকবে না, তখন জীবন-জীবিকায় প্রাণচাঞ্চল্য এবং অর্থনীতিতে গতি ফিরে আসবে।’

জি এম কাদের করোনা পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির কার্যক্রম সর্ম্পকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে জনগণের পাশে থাকতে জাতীয় পার্টি একটি কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির আহ্বায়ক আলমগীর সিকদার লোটন আর সদস্য সচিব করা হয়েছে মোস্তফিজুর রহমানকে। এদের নেতৃত্বে সারাদেশে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এই কমিটির কাজ হচ্ছে- করোনা আক্রান্ত মানুষদের সহায়তা প্রদান করা। এ জন্য টেলি মেডিসিনসহ অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সারাদেশের খোঁজ-খবর রাখতে জাতীয় পার্টির কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে।’

তিনি দেশের রাজনীতি সম্পর্কে বলেন, ‘দেশে এখন কোনো রাজনৈতিক দলের সাংগঠনিক কার্যকম নেই। যে কার্যক্রমগুলো আছে তা করোনা সম্পর্কিত।’

জাতীয় পার্টি জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর