কোভিড-১৯: ইউরোপে ফের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি
১৩ আগস্ট ২০২০ ১৩:৩৯
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিল করে অর্থনীতি ধীরে ধীরে সচল করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ফের কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে দেখা গেছে। খবর বিবিসি।
সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে মহাদেশটির অনেক দেশই এখন বিভিন্ন শহর ও এলাকায় মাস্ক বাধ্যতামূলক করাসহ নতুন নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করছে বলে বিবিসির ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এদিকে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় জার্মানি এক হাজার ২০০র বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করেছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। দেশটিতে তিন মাসের মধ্যে এদিনই সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।
জার্মানির অধিবাসীদের অনেকেই বিভিন্ন অঞ্চলে ছুটি কাটিয়ে ফেরার পর সংক্রমণের এ ঊর্ধ্বগতি খানিকটা প্রত্যাশিতই ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাশাপাশি, ফ্রান্সে ২৪ ঘণ্টায় আড়াই হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে মে মাসে লকডাউন তুলে নেওয়ার পর একদিনে আর কখনও এত রোগীর দেখা মেলেনি।
এছাড়াও, পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্পেনে মঙ্গলবার নতুন করে এক হাজার ৪১৮ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে।
এ ব্যাপারে কাতালুনিয়া ওপেন ইউনিভার্সিটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সালভাদর মাসিপ বলেছেন, আমরা এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, যেখান থেকে পরিস্থিতি ভালোর দিকেও যেতে পারে আবার খারাপের দিকেও যেতে পারে। এর অর্থ হচ্ছে, পরিস্থিতি আরও গুরুতর হওয়ার আগে সংক্রমণ কমাতে আমাদের এখন বিধিনিষেথ শিথিলের পথে হাঁটা থামাতে হবে।
এরই মধ্যে, স্পেনে শনাক্ত রোগী তিন লাখ ২৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ সংখ্যা পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
অন্যদিকে, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে বেলজিয়াম বুধবার থেকে রাজধানী ব্রাসেলসের সব এলাকায় সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার নির্দেশনা দিয়েছে।
এর আগে, ব্রাসেলসে কেবল জনসমাগম হয় এমন জায়গা ও শপিং সেন্টারের মতো স্থানগুলোতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ছিল।
এখন পর্যন্ত, বেলজিয়ামে ৭৫ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রাণঘাতী ভাইরাসে দেশটিতে মৃত্যুও ৯ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে।
অপরদিকে, সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে হিমশিম খাওয়া ফ্রান্স চলতি বছরের প্যারিস ম্যারাথন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফ্রান্সে সরকারি হিসাবেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বুধবার (১২ আগস্ট) গ্রিসও একদিনে ২৬২ নতুন রোগী শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে। মহামারী শুরুর পর দেশটিতে এর আগে একদিনে এত রোগী শনাক্ত হয়নি। গ্রিসে এখন পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ১৭৭, মৃত্যু হয়েছে ২১৬ জনের।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় পর্যটনের ভরা মৌসুমেও দেশটির কর্তৃপক্ষ রেস্তোরাঁ, বারের পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশ এবং কিছু বলকান দেশের নাগরিকদের গ্রিসে প্রবেশও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।