প্রতিটি জেলায় প্লাজমা সেন্টার হওয়া দরকার— ডা. জাফরুল্লাহ
১৫ আগস্ট ২০২০ ১৯:২২
ঢাকা: দেশের প্রতিটা জেলায় প্লাজমা সেন্টার হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শনিবার (১৫ আগষ্ট) ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্যে নগর হাসপাতালে প্লাজমা সেন্টার উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস বিভিন্ন রকম উপসর্গ সৃষ্টি করে। রোগ ভালো হলেও রোগীকে খুব দুর্বল করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে প্লাজমা প্রদানের বিষয়টি আরও প্রচার হওয়া দরকার। অধ্যাপক এম এ খানের নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি জেলায় প্লাজমা সেন্টার হওয়া দরকার।
গণস্বাস্থ্যের প্লাজমা সেন্টারে প্রতিদিন ২৫ জন করোনামুক্ত রোগীর রক্ত থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্লাজমা সংগ্রহের কতগুলো নিয়ম আছে। সায়েন্টিফিক নিয়ম মেনেই আমরা প্লাজমা নেব।’
হেমাটো অনকোলজিস্ট অধ্যাপক এম এ খান বলেন, ‘প্লাজমা দুই পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয়। ওটাকে প্লাজমাফেরিসস, যা করা হয় একটা মেশিনের সাহায্যে। সেটা ব্যয়বহুল। ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা একটা মেশিনের দাম। নমুনা সংগ্রহ করতে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা লাগে। আরেকটা পদ্ধতি হল, করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠা রোগীর রক্তের নমুনা থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা। এখানে সমস্যা হল, একজনের কাছ থেকে যে প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে, তা শুধু একজনকেই একবার দেওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্লাজমার চাহিদা কমে গেছে। মানুষের আতঙ্ক কমে গেছে। আমার মনে হয় সেপ্টেম্বরের দিকে করোনা ডিক্লাইন ফেইজের দিকে আসবে, আস্তে আস্তে কমতে থাকবে।’
এম এ খান বলেন, ‘প্লাজমা থেরাপি কোন সময়ে কাকে দিতে হবে, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগে থেকে প্ল্যান করি, বয়স্ক রোগী যারা রয়েছেন, তাদের যদি আমরা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে দিতে পারি, এটা হলো উত্তম। কারণ ভ্যাকসিন আসার আগ পর্যন্ত এটা খুব কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি।’
তিনি বলেন, ‘প্লাজমা সংগ্রহের বড় চ্যালেঞ্জ হল- ডোনারদের কারও কারও নমুনা অ্যান্টিবডি কম থাকে। যারা অধিক মাত্রায় আক্রান্ত হন, যাদের মধ্যে লক্ষণ উপসর্গ বেশি থাকে, তাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি বেশি থাকে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, অ্যান্টিবডি পরিমাপ করা। কিছু কিছু জায়গায় অ্যান্টিবডি টেস্ট হচ্ছে। প্লাজমার মূল শক্তি হচ্ছে অ্যান্টিবডি। কারণ, এটা ভাইরাসের গায়ে লেগে, ভাইরাসটাকে অকেজো করে দেয়, তখন ভাইরাস আর সেলের মধ্যে ঢুকতে পারে না। অ্যান্টিবডি টেস্ট দ্রুত করা দরকার। প্লাজমা দিতে হবে প্রথম দিকে। প্রথম দিকে শরীরে ভাইরাসের পরিমাণ বেশি থাকে।’
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে দেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও নগর হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোলাম মো. কোরেইশী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কিট উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল, অধ্যাপক ডা. শওকত আরমান, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের মাইক্রো বায়োলজির প্রধান অধ্যাপক ডা. মাহবুবুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুল হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্লাজমা সেন্টার