Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের খলনায়েকরা প্রধানমন্ত্রীর সাথেই রয়েছেন’


২৪ আগস্ট ২০২০ ১৭:০৮

ঢাকা: ১৫ আগস্ট মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের খলনায়েকরা প্রধানমন্ত্রীর সাথেই রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের খলনায়েকরা প্রধানমন্ত্রীর সাথেই রয়েছেন। কোনো এক রহস্যজনক কারণে প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা বলেন না। ১৫ আগস্টের রক্তাক্ত ঘটনার পর যারা কেবিনেট ও সংসদে গেলেন, তারা শেখ মজিবুর রহমানের কেবিনেট ও পার্লামেন্টেও ছিলেন। এটি নতুন করে বলার আর প্রয়োজন নেই যে আওয়ামী লীগের নেতারাই রক্তাক্ত লাশ ডিঙিয়ে নতুন করে শপথের মাধ্যমে মন্ত্রিসভা গঠন করেন খন্দকার মুশতাকের নেতৃত্বে।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘খন্দকার মুশতাকের মন্ত্রিসভার শপথ পরিচালনা করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মুশতাকের সময়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্যই শেখ হাসিনার অধীনে রাজনীতি করেছেন। কিন্তু তাদের কখনো তিনি খলনায়ক বলেননি।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সরকারি চাকরি করতেন, এইচ টি ইমামের মতোই। সেনাবাহিনী সরকারের একটি বিভাগ। তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় ব্যক্তি, প্রথম ব্যক্তি নন। যিনি সেনাবাহিনীর প্রধান, তার কোনো দায় নেই, দায় নাকি জিয়াউর রহমানের! তৎকালীন সেনাপ্রধান শফিউল্লাহর হাতেই ছিল সমগ্র সেনাবাহিনীর কমান্ড। অথচ আওয়ামী লীগের এমপি হওয়ার কারণে তিনি অভিযুক্ত নন। কারণ, যে যত অপরাধই করুক, শেখ হাসিনার আনুগত্য করলে তার সাত খুন মাফ।’

বিজ্ঞাপন

‘১৫ আগস্টের সাথে আওয়ামী লীগ জড়িত, তা দিবালোকের মতো যেমন সত্য, ঠিক তেমনিভাবে ২১ আগস্টের সাথেও আওয়ামী লীগের আপনজনেরা জড়িত। ২১ আগস্টে বোমা হামলার পূর্বাপর ঘটনা পরম্পরাতে তা সুস্পষ্ট। অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে একটি উদাহরণ হচ্ছে, মুক্তাঙ্গন থেকে আওয়ামী কার্যালয়ে কেন তারা সভা স্থানান্তর করেছিলেন, সেই রহস্য সম্পর্কে তারা নির্বিকার থাকেন,’— বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করার রক্তাক্ত কর্মসূচি  গ্রহণের উদাহরণ একমাত্র আওয়ামী সরকারের। বাম নেতা ও প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ সিকদারসহ সেই সরকারের আমলেই জাসদ ও বাম সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যার মধ্য দিয়ে খুনের রাজনীতির ঐতিহ্য তৈরি করে আওয়ামী লীগ। এর পরে যতবারই তারা ক্ষমতায় আসছে, ততবারই পুলিশের কাস্টডিতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের খুনসহ মিছিলে-জনসভায় আক্রমণ করে খুন করার নজির স্থাপন করেছে।’

‘আর এবারের ১২ বছরের দুঃশাসনের সীমাহীন লুটপাট-টাকা পাচার-ব্যাংক লোপাটের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের সমর্থক শব্দ হয়েছে আওয়ামী লীগ। বেপরোয়া দুর্নীতি আওয়ামী লীগের অলিখিত দলীয় ইশতেহার। গণতন্ত্রকে কবরের মধ্যে ঢুকিয়ে জনগণকে বশ মানাতে রক্তাক্ত বলপ্রয়োগের জন্য হুকুম প্রতিনিয়ত উচ্চারিত হয় আওয়ামী মন্ত্রীদের মুখ থেকে,’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘সরকারের বাধ্যকরণ নীতির কারণ হচ্ছে সব সেক্টরে তারা ব্যর্থ হয়েছে নিদারুণভাবে। অর্থনীতিতে অধোগতি, করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থতা, হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা না থাকা, আইসিইউ’র অভাব, নমুনা পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রিতা, ফল পাওয়ার আগেই রোগীর মৃত্যুসহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিপর্যয়, মৃত্যু ও রোগাক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি, ধ্বংসপ্রাপ্ত শিক্ষা, মানুষের জীবনের নিরাপত্তাহীনতা, কর্মসংস্থানের অভাব, লাখ লাখ বেকার, দুর্নীতি, টাকা পাচার, ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস, সুপেয় বিশুদ্ধ পানির অভাব ও মূল্যবৃদ্ধি, আইন ও বিচার বিভাগকে হস্তগত করা, ক্যাসিনো, ভয়ংকর সামাজিক অবক্ষয়, নারী-শিশু নির্যাতন ও ক্রসফায়ারের জন্য এক বর্বর চেহারা ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের।’

রিজভী বলেন, ‘মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে, সেটিকে ঢাকতেই ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট নিয়ে জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আওয়ামী মন্ত্রীরা ধৃষ্টতাপূর্ণ অবাস্তব গালগল্প ক্রমাগত বর্ণনা করে যাচ্ছে।’

ফাইল ছবি

১৫ আগস্ট ২১ আগস্ট রুহুল কবির রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর