Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৮টি দিক নির্দেশক সাইনবোর্ডে ব্যয় হবে ৩০ লাখ টাকা!


২৫ আগস্ট ২০২০ ১১:১৪

ঢাকা: দিনাজপুরের একটি সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের একেকটি দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড স্থাপনে ব্যয় হবে ১ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় মোট ১৮টি সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে। যার জন্য মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৩০ লাখ ৪২ হাজার টাকা। তবে সেগুলো কোন ধরণের সাইনবোর্ড তা জানা যায়নি। দিক নির্দেশক সাইবোর্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

‘দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি (স্থলবন্দর)-ডুগডুগি-ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ এবং একই সড়ক বিভাগাধীন সড়কসমূহে বিদ্যমান সরু/জরাজীর্ণ কালভার্ট পুনঃনির্মাণ ও বাজার অংশে রিজিড পেভমেন্টসহ ড্রেন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পে এ ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে পুনর্মূল্যায়ন ছাড়াই প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। যেকোনো একনেক বৈঠকে এটি অনুমোদন হতে পারে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।

পরিকল্পনা কমিশন থেকে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পে রোড মার্কিং অঙ্গে  থার্মোপ্লাস্টিক রঙের বিষয়টি উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া প্রকল্পে প্রস্তাবিত ট্রাফিক সাইন, সাইন পোস্ট এবং দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড পথচারী ও গাড়ি চালকদের দৃষ্টিগোচরভূত করে নির্মাণ ও স্থাপন করতে হবে। এ লক্ষ্যে সমস্ত অঙ্গের সংখ্যাসহ ড্রয়িং ও ডিজাইন এনেক্সার হিসেবে ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি করোনা পরিস্থিতির অনেক আগেই প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। তখনকার বিশ্ব পরিস্থিতি যেরকম ছিল কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি সেরকম নেই। মহামারির কারণে ইতোমধ্যেই রাজস্ব আয় ব্যাপক পরিমাণে কমে গেছে। উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় সাশ্রয়ের নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এরকম প্রেক্ষাপটে পরিকল্পনা কমিশনের উচিত ছিল ব্যয় প্রস্তাবগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা। এটি করা গেলে তখন হয়ত সাইন বোর্ড নির্মাণে এত টাকা ব্যয়ের মতো অতিরিক্ত ব্যয় পরিহার করা যেত।’

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ভুমি অধিগ্রহণ ও অবকাঠামো ক্ষতিপূরণ, সড়ক ও বাঁধে মাটির কাজ, বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, হার্ড শোল্ডার, সার্ফেসিং, রিজিড পেভমেন্ট, পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ, আরসিসি কালবার্ট পুনঃনির্মাণ, আবাসিক ভবন নির্মাণ ও দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড স্থাপন।

সূত্র জানায়, ‘দিনাজপুর সড়ক বিভাগাধীন হিলি (স্থলবন্দর)-ডুগডুগি-ঘোড়াঘাট জাতীয় মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ২৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর স্থলবন্দর হিলি হতে শুরু হয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুর নামক স্থানে গোবিন্দপুর-ঘোড়াঘাট-বিরামপুর-ফুলবাড়ী-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে মিলিত হয়েছে। সড়কটির ৩২তম কিলোমিটারে ৬৩ দশমিক ৭৯ মিটার দৈর্ঘ্যের সরু, জরাজীর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত একটি সেতু রয়েছে। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত ও জরাজীর্ণ হওয়ায় যেকোনো সময় ভেঙে দুর্ঘটনা ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সড়কের বিদ্যমান প্রস্থ ৫ দশমিক ৫০ মিটার এবং অ্যানুয়াল অ্যাভারেজ ডেইলি ট্রাফিক ৫ হাজার ৪৪। পেভমেন্টের পুরুত্ব কম থাকায় এবং ভারি যানবাহন চলাচলের ফলে সড়কটির পেভমেন্ট বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

সূত্র আরও জানায়, নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ যাতায়াতের জন্য দিনাজপুর সড়ক বিভাগের অপর ৫টি জেলা মহাসড়কে বিদ্যমান ক্ষতিগ্রস্ত ও সরু কালভার্টেও স্থলে আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা প্রয়োজন। অপরদিকে সরকার দেশের স্থলবন্দরগুলোর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য ৫ দশমিক ৫০ মিটার হতে ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে উন্নীতকরণসহ ৫টি জেলা মহাসড়কে বিদ্যমান ক্ষতিগ্রস্ত ও সরু কালর্ভাটের স্থলে আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য শামীমা নার্গিস সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজধানী ঢাকার সাথে হিলি স্থলবন্দরের উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপনসহ প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।’

সড়ক প্রশস্তকরণ সাইনবোর্ড সাইনবোর্ড স্থাপন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর