Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই’


২৬ আগস্ট ২০২০ ০১:৫৭

ঢাকা: পরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এলেও আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই বলে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। কারণ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা খুন করেছে, সেই খুনিদের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারীরা এখনো সক্রিয় রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উদযাপন পরিষদ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমি শিল্পবোদ্ধা নই। তবে যে কথাটা বলতে চাই, শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্যে আমাদের একটি লিগ্যাসি আছে। আমরা এমন একটি সংগ্রামের উত্তরাধিকারী যে আমরা আমাদের সংগ্রামের ঐতিহ্যকে ধারণ করি। বাংলাদেশের কোনো শিল্পীর শিল্পকর্ম, কোনো কবির কবিতা, কোনো লেখকের কোনো লেখা সম্পূর্ণ হয় না যদি সেখানে মুক্তিযুদ্ধ না থাকে, যদি সেখানে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর কথা না থাকে।

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্মরণ করে তিনি বলেন, এটি কোনো একটি রাজনৈতিক নেতার হত্যাকাণ্ড ছিল না কিংবা এটি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা করে অন্য কারও ক্ষমতা দখলের সাধারণ হত্যাকাণ্ড ছিল না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক বিপর্যয় ঘটেছিল, যা বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির জন্য একটি বড় ধরনের অপঘাত ছিল।

বিজ্ঞাপন

পঁচাত্তর পরবর্তী ২১ বছর জাতির পিতার নাম ইতিহাসকে থেকে মুছে ফেলতে তৎকালীন স্বৈরশাসকদের নানামুখী ষড়যন্ত্রের কথাও উল্লেখ করেন বিপ্লব বড়ুয়া। তিনি বলেন, ইতিহাস বঙ্গবন্ধুর স্থান নির্ধারণ করেছে, কালের ইতিহাস বঙ্গবন্ধুকে স্থান দিয়েছে। তাই কোনো হত্যাকারী, কোনো ষড়যন্ত্রকারী বঙ্গবন্ধুকে সেখান থেকে নামাতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যতদিন এই পৃথিবীতে একজন বাঙালি বেঁচে থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।

তিনি বলেন, জাতি হিসাবে আমাদের যে ঐক্যবদ্ধ থাকার একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, খুনিরা সেই জাতিকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত করেছে। জাতি হিসাবে ঐক্যবদ্ধ থাকার সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট।

জাতির পিতাার খুনিদের রাজনীতির উত্তরাধিকারীরা এখনো শিক্ষা নেয়নি উল্লেখ করে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, এই খুনিদের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারীরা ১৫ আগস্ট থেকে শিক্ষা নেয়নি। তারা  ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই যে বঙ্গবন্ধুর খুনি, গ্রেনেড হামলার হামলাকারী— তাদের সঙ্গে রিকনসিলিয়েশনের কোনো সুযোগ নাই। কারণ ইতিহাস তারা শিক্ষা গ্রহণ করে নাই।

এজন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ছাত্রলীগকে কখনো পরাজিত হতে দেওয়া যাবে না। ছাত্রলীগ পরাজিত হলে বাংলাদেশ পরাজিত হবে। আমি জানি, ছাত্রলীগের অনেক কর্ম নিয়ে অনেক কথা হয়। করোনার সময় অনেকে বলেছে ছাত্রলীগ স্বাস্থ্যবিধি মানে না। আমি এক টকশোতে বলেছিলাম, ছাত্রলীগের ভিশন হচ্ছে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। দুঃসময়ে মানুষের পাশে থাকা। ছাত্রলীগ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরন্নকে অন্ন তুলে দিয়েছে করোনার সময়। তার কাছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকা সম্ভব নয়। কারণ মানুষের পাশে থাকার একটি ঐতিহ্য ছাত্রলীগের রয়েছে।

আত্মতুষ্টিতে না ভুগে সব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই দফতর সম্পাদক বলেন, ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের সব কর্মকাণ্ডে যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিফলিত হয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অভিপ্রায় যেন আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে পারি, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। টানা তিনটি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এসেছি বলে আত্মতৃপ্তির কোনো সুযোগ নাই। কারণ বঙ্গবন্ধুকে যারা খুন করেছে, তাদের রাজনৈতিকভাবে নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশের আগামী দিনের নাগরিক যারা, আগামী দিনে যারা ছাত্রলীগ করবে, তাদের নিরাপদ একটি আবাসভূমির জন্য রাজনৈতিকভাবে বঙ্গবন্ধুর খুনের উত্তরাধিকারের রাজনীতি যারা করে, তাদেরকে নির্মূল করতে হবে। সেই সংগ্রামে ছাত্রলীগকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।

জাতীয় শোক দিবস উদযাপন পরিষদের সভাপতি তন্ময় দেবনাথের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ফাইম ইসলাম লিমন আলোচনা সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বিশেষ আলোচক হিসেবে ঢাকা ঢাবি চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার আরিফুজ্জামান নুরনবী এবং বিশেষ বক্তা হিসাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

১৫ আগস্ট ২১ আগস্ট ছাত্রলীগের আলোচনা সভা জাতির পিতাকে হত্যা ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া শোক দিবস ষড়যন্ত্র

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর