ফেসবুকে প্রতারণা: ৪ বিদেশি নাগরিক গ্রেফতার
২৬ আগস্ট ২০২০ ১৪:৩০
ঢাকা: ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) অর্গানাইজড ক্রাইম শাখা। চক্রের চার সদস্য – সিসম, মরো মহাম্মদ, মরিসন, অ্যান্থনি। এরা নাইজেরিয়া ও ঘানার নাগরিক।
সিআইডি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর দক্ষিণখানের কাওলা ও বসুন্ধরা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিব ফরহান এর নেতৃত্বে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি বিশেষ টিম গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আসামিদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ছয়টি ল্যাপটপ, বেশ কিছু সিম এবং ছয়টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে আসামিদের হাজির করে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা বেগম বলেন, গ্রেফতার চার বিদেশির প্রতারণার শিকার একজন ভিকটিমের অভিযোগের সূত্রধরে সিআইডি তাদের খুঁজে বের করে। তারা অভিনব কায়দায় (সাধারণত বিপরীত লিঙ্গের আইডির সঙ্গে) ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে। বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে একটি মেসেঞ্জার আইডি থেকে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসহ পার্সেল গিফট করার প্রস্তাব দেয়।
পরবর্তীতে, মেসেঞ্জারে এসব মূল্যবান সামগ্রীর এয়ারলাইন্স বুকিং এর ডকুমেন্ট পাঠায়। পাশাপাশি, গিফট বক্সগুলোতে কয়েক মিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে বলে তারা ভিকটিমকে জানায় এবং তা কাস্টমস থেকে রিসিভ করতে বলে।
এ সময়, তাদের অন্য সহযোগীদের মাধ্যমে কাস্টমস কমিশনার পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে মূল্যবান গিফট গ্রহনসহ শুল্ক বাবদ মোটা অংকের টাকা কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হয়। গিফট গ্রহণ না করলে আইনি জটিলতার ভয়ও দেখানো হয়।
ফলশ্রুতিতে, ভিকটিম তাদের দেওয়া বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট নম্বরে মোট ৫৫ হাজার টাকা জমা দেয়। একই ভাবে আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে সারাদেশে অসংখ্য ভিকটিমের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা গত কয়েক মাসের মধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে সিআইডি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয়েছে।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত বিদেশিরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে এ ধরণের প্রতারণা করে আসছে। অথচ, তারা এদেশে অবস্থানের বৈধ কোনো কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে সিআইডি জানিয়েছে, প্রথমত তারা ট্যুরিস্ট, খেলোয়াড়, বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে স্থানীয় কিছু এজেন্টের সহায়তায় এধরনের প্রতারণায় জড়িত হয়। প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত অনুসন্ধান করছে সিআইডি।
এ বিষয়ে ভিকটিম খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি মামলা রুজু করেছেন।