বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বই কেনায় অনিয়ম তদন্তে সংসদীয় উপকমিটি
২৬ আগস্ট ২০২০ ১৮:৫৮
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই কেনায় বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব ও মেধাস্বত্ব চুরির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্তে উপকমিটি গঠন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বুধবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির অষ্টম বৈঠকে এই উপকমিটি গঠন করা হয়। সংসদীয় কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য ছাড়াও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থতি ছিলেন।
কমিটি সূত্র জানায়, সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবুকে আহ্বায়ক করা হয়েছে চার সদস্যের কমিটিতে। উপকমিটির সদস্যরা হলেন— আলী আজম, বেগম শিরীন আখতার ও মো. মোশারফ হোসেন। উপকমিটিকে যথাসম্ভব দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরির জন্য বই কেনায় অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবর থেকে আমরা এসব অনিয়মের কথা জানতে পেরেছি। তাই বিষয়টি নিয়ে কমিটির বৈঠকে আলোচনা শেষে একটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। উপকমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর কমিটি প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে।
কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ তৈরির জন্য বই কেনায় অনিয়মের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বক্তব্য সন্তোষজনক না হওয়ায় সংসদীয় উপকমিটি গঠন করা হয়। এর আগে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ ও বঙ্গবন্ধুর জেলজীবন নিয়ে বই ‘৩০৫৩ দিন’ কেনার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামে দু’টি প্রকাশনা সংস্থা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই দু’টি প্রতিষ্ঠানের নামে বই দু’টির গ্রন্থস্বত্ব ও মেধাস্বত্ব চুরি করে নাজমুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি প্রকল্পের মোট ২৮ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ২০ কোটি ৭০ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকা পাচ্ছেন। যিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে কর্মরত রয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে, বৈঠকে করোনা মহামারিকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনটি নিয়ে আলোচনা শেষে করোনাকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পড়ালেখার খোঁজখবর নেওয়ার এবং পড়ালেখা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকতে সুপারিশ করা হয়।
উপকমিটি তদন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বই কেনায় অনিয়ম বঙ্গবন্ধু কর্নার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি