Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঝুঁকি নিয়েই ক্যাম্পাসে ফিরছেন রাবি শিক্ষার্থীরা


২৮ আগস্ট ২০২০ ১২:৩০

ফাইল ছবি

রাজশাহী: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস প্রাথমিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে করোনা প্রকোপ বাড়লে ১২ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দফায় দফায় ছুটি বেড়ে সর্বশেষ ৩ অক্টোবরে ঠেকেছে। তবে নির্ধারিত এই সময় পর্যন্ত বাড়িতে থাকতে পারছেন না অনেক শিক্ষার্থী। আর্থিক সংকট, টিউশনি চলে যাওয়ার আশঙ্কা, পড়াশুনার ক্ষতি ও অনলাইনে ক্লাস করতে ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীরা রাজশাহী ফিরতে শুরু করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকায় শহর এবং ক্যাম্পাসের আশপাশের মেসে অবস্থান করছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতিবেদকের আলাপচারিতায় এ সংক্রান্ত নানা বিষয় উঠে আসে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রিপন মাহমুদ জানালেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কবে ক্যাম্পাস খুলবে তা বলা মুশকিল। এই কঠিন পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকায় পড়াশুনায় একটা বিরতি এসেছে। এই ক্ষতি কাটাতে রাজশাহী ফেরা। হোম টিউশনি নতুনভাবে শুরু করাও ক্যাম্পাসে ফেরার অন্যতম কারণ। অধিকাংশ শিক্ষার্থী করোনাকালে আর্থিক সংকট ও টিউশনি চলে যাওয়ার আশঙ্কায় ক্যাম্পাস খোলার আগেই ফিরতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কোভিড-১৯ এর কারণে পরিবারের অনেক সদস্য বেকার, তাই  উপার্জনও নেই। আর্থিক টানাপোড়নের কারণে নিজের ব্যক্তিগত খরচ চালানোও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পরিবারে বোঝা হয়ে না থেকে করোনা দুর্যোগেই টিউশনি করতে হচ্ছে তাদের। অনেক শিক্ষার্থী একই কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে ক্যাম্পাসের আশেপাশের মেসগুলোতে উঠছেন।

বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানালেন, অনলাইন ক্লাসের জন্য ইন্টারনেট কেনার সামর্থ্য তাদের নেই। লকডাউনে পরিবারের উপার্জন কমে যাওয়ায় পরিবার থেকে সহযোগিতাও পাচ্ছেন না তারা। গ্রামে থেকে অনলাইন ক্লাসে নেট সংযোগ পেতে অসুবিধা হওয়ায় রাজশাহীতে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান এই শিক্ষার্থীরা।

তারা বলেন, বাড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় ইন্টারনেটের অবস্থা নড়বড়ে। গ্রাম থেকে দূরের বাজারে গিয়ে ক্লাস করতে হয়। ইন্টারনেট সংযোগ কখনও টুজি, কখনও থ্রিজিতে আটতে থাকে। আবার অনেকসময় সংযোগ একেবারেই পাওয়া যায় না। গ্রামে থেকে  বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত অনলাইন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাস টেস্টে অংশ নিতে না পারায় রাজশাহীতে চলে অঅসতে হয়েছে তাদের।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের  অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জাবেদুল ইসলাম মনি জানালেন, টিউশনি কিংবা কোন কাজ না থাকলেও তিনি মেসে  উঠেছেন। দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকায় ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা তৈরি হচ্ছিল। স্নাতক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া তার প্রধান লক্ষ্য। বাসায় থেকে পড়াশুনার ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারছিলেন না। তাই শহরে চলে এসেছেন।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুল ফাত্তাহ রাফিও একই সুরে বলেন, দীর্ঘ পাঁচ মাস বাড়িতে থাকার কারণে একঘেঁয়েভাব চলে এসেছে। একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছাড়া দেশের সকল কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান, অফিস, আদালত —কোন কিছুই বন্ধ নেই।

রাবির ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)’র শিক্ষার্থী আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি নিজের ইচ্ছায় ক্যাম্পাসে এসেছি। বিশেষ করে পড়াশোনা ধরে রাখার জন্য। আর অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফিরছে আর্থিক সমস্যার কারণে। অনেকের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট রয়েছে যেগুলো উইপোকা খেয়ে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলো নিতে এসেছে। যাদের পড়াশোনার শেষের দিকে তারা চাকরির প্রস্তুতির জন্য রাজশাহীতে এসেছেন। একই কারণে রাজশাহীতে ফিরেছেন বলে জানালেন আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসাইন মুন্না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাবি

বিজ্ঞাপন

বিদেশ বিভুঁই। ছবিনামা-১
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০০

আরো

সম্পর্কিত খবর