Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্ধেকও সংগ্রহ হয়নি ধান-চাল, সময় বাড়ানোর ইঙ্গিত


৩১ আগস্ট ২০২০ ১১:৪০

ঢাকা: সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শেষ হচ্ছে আজ (৩১ আগস্ট)। সময় শেষ হলেও এবার লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। এই পরিস্থিতিতে ধান চাল সংগ্রহে সময় বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হতে পারে।

এবার চলতি বোরো মৌসুমে ২০ লাখ মেট্রিক টন ধান- চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। এরমধ্যে ৮ লাখ টন ধান, ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল এবং দেড় লাখ টন আতপ চাল সংগ্রহ করার কথা। কেজি প্রতি ২৬ টাকা দরে ধান আর ৩৬ টাকা দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা প্রতি কেজি দরে আতপ চাল কেনার দাম নির্ধারণ করা হয়। সে লক্ষ্যে চাল কল মালিকরা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। চুক্তি অনুযায়ী গত ২৬ এপ্রিল থেকে বোরো ধান কেনা শুরু করেন। আর ৭ মে থেকে শুরু করা হয় চাল সংগ্রহ।

বিজ্ঞাপন

খাদ্য অধিদফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়া হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট পর্যন্ত পূর্ব নির্ধারিত ৮ লাখ টন বোরো ধান কেনার কথা থাকলেও মাত্র ১ লাখ ৯৯ হাজার ৬৫৪ মেট্রিক টন সংগ্রহ হয়েছে। ১০ লাখ টন বোরো সিদ্ধ চালের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ২৬ হাজার ২৭৯ মেট্রিক টন। আর দেড় লাখ টন বোরো আতপ চালের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে ৭৫ হাজার ১৪৩ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম।

কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ধান চাল সংগ্রহ না হওয়ার পেছনে করোনাভাইরাস, বৃষ্টি- বন্যা ঘুর্ণিঝড় আর সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধান -চালের দাম বেশি হওয়ার যুক্তি দেখিয়েছেন চালকল মালিকরা।

এ প্রসঙ্গে চালকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক এ কে এম লায়েক আলীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার চারিদিক থেকে আসা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমরা সময়মত ধান- চাল সরকারকে সরবরাহ করতে পারিনি। করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর থেকে হাটে বাজারে ধান সংকট ছিল। কারণ দুর্ভিক্ষের শঙ্কা করে কৃষকেরাই মজুত করেছে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পান শেষ না হতেই দফায় দফায় বন্যা, বৃষ্টি জলোচ্ছ্বাস। দেশের যে ৩৩ জেলায় বন্যা হয়েছে, সে সব জেলা থেকে ধান চাল সংগ্রহ করা যায়নি বললেই চলে। এসব কারণে বাজারে ধান চালের দাম বাড়তি রয়েছে। যা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতিকেজি ৪ টাকা লোকসান দিতে হবে। এসব কারণে আমরা আমরা নির্ধারিত সময়ে এবার আমরা ধান চাল সরবরাহ করতে পারিনি। তবে আরেক মাস অর্থাৎ সেপ্টেমর মাস সময় পেলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে সময়মত ধান চাল সংগ্রহ না হওয়া অন্যদিকে বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি, জানা যায় এ সব কারণে দেশের চালকল ও ব্যবসায়ীদের কাছে কি পরিমান ধান, চাল, গম মজুত আছে সেই তথ্য জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সব কিছু মিলিয়ে ধান চাল সংগ্রহে সময় বাড়ানোর চিন্তা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘ধান চাল সংগ্রহে চালকল মালিকদের আরো পনেরো দিন অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়ার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। তবে তা প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলেই সময় বাড়ানো হবে।’

এদিকে চলতি মৌসুমে সরকারি ধান চাল সংগ্রহে ব্যর্থ হওয়া চালকল মালিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।

উল্লেখ্য, সরকারি গুদামে বর্তমানে ১৩ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এরমধ্যে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল এবং ২ লাখ ৩৯ হাজার মে. টন গম।

খাদ্য বিভাগ ধান-চাল সংগ্রহ সরকারি ধান-চাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর