Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘যারা মাঠ নেই বলছেন তারা না জেনে বলছেন’


১০ মার্চ ২০১৮ ১৮:২৮

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মাঠ সংকটের কারণে চট্টগ্রাম নগরীর পরিবর্তে পটিয়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমের আলোচনা নাকচ করেছেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, চট্টগ্রাম নগরীতে মাঠের কোনো সংকট নেই। যারা মাঠ নেই বলছেন, তারা না জেনে বলছেন।

জনসভাকে সামনে রেখে শনিবার (১০ মার্চ) নগরীর মুসলিম ইনিস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখা আওয়ামী লীগের যৌথ বর্ধিত সভায় মেয়র এই বক্তব্য দেন। ২১ মার্চ পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই জনসভা করার কথা রয়েছে।

শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বড় আকারের রাজনৈতিক সমাবেশ করার জন্য সাধারণত চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দান অথবা আউটার স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু পলোগ্রাউন্ডে বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। আউটার স্টেডিয়ামে সুইমিং পুল নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস) যার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আছেন আ জ ম নাছির উদ্দিন। শহরের অন্যতম খেলার মাঠে সুইমিং পুল নির্মাণের বিরোধিতা করে এক বছর আগে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে মামলার আসামি হতে হয়েছে নগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।

এই অবস্থায় মাঠের অভাবে নগরীর পরিবর্তে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ায় শেখ হাসিনার জনসভা করা নিয়ে নেতাকর্মীদের সমালোচনার মুখে আছেন মেয়র, যিনি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকেরও দায়িত্বে আছেন।

সেই সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য বর্ধিত সভাকে বেছে নিয়ে মেয়র বলেন, শহরে না হয়ে পটিয়া উপজেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা হচ্ছে। মিডিয়ায় নানা কথা আসছে। সমালোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, শহরে মাঠ নেই। পলোগ্রাউন্ডে মেলা হচ্ছে বলে সেখানে জনসভা করা যাচ্ছে না। কিন্তু শহরে তো আরও মাঠ আছে। আমি সিজেকেএ-এর সেক্রেটারি। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে কিংবা আউটার স্টেডিয়ামেও জনসভা করা যেত। যারা বলছেন শহরে মাঠ নেই, তারা না জেনে বলছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে জনসভা করা আর পটিয়া উপজেলায় জনসভা করার আবেদন এক না। পটিয়ায় জনসভা করে সেই আবেদন পূরণ হবে না। সে জন্য আমি এপ্রিল থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নগরীতে প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি জনসভা করার আবেদন করছি।

নগরীতে না হলেও পটিয়ায় জনসভা করার জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে মেয়র বলেন, শহরে জনসভা হলে যা যা করতাম এখনও তা-ই করব। সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে। টাকাপয়সাও দেব। সংগঠন প্রশ্নে আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।

তিনি বলেন, সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে কাউকে কোনো অপকর্ম করতে দেব না। সংকীর্ণতা পরিহার করতে হবে। যারা দলের ভেতরে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করছে তাদের দল থেকে বের করে দিতে হবে।

এ দিকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ‘নগরীর পরিবর্তে পটিয়ায় জনসভা’ নিয়ে মেয়রের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেন। তিনি বলেন, আমাদের সাংগঠনিক কমিটি আলাদা হলেও সব আন্দোলন-সংগ্রাম ঐক্যবদ্ধভাবেই করেছি। মহিউদ্দিন চৌধুরীকে টানা তিনবার মেয়র হিসেবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে জিতিয়ে এনেছিলাম। আ জ ম নাছির যখন মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন আমরা নগরের নির্বাচন নাকি দক্ষিণ জেলার নির্বাচন সেটা চিন্তা করিনি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আ জ ম নাছিরকে মেয়র বানিয়েছি।

তিনি বলেন, পটিয়ায় স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভা হবে। এটা আমাদের জন্য রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ জানান, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা ছিল চট্টগ্রাম নগরীতে জনসভা করবেন। কিন্তু পলোগ্রাউন্ড ময়দানে বাণিজ্যমেলা থাকায় জনসভা পটিয়ায় করতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি আগামী এপ্রিলের চট্টগ্রাম নগরীতে আরেকটি জনসভা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব। তবে পটিয়ার জনসভাকেও জনসমুদ্রে পরিণত করতে হবে। নারীদের ব্যাপকভাবে উপস্থিতি থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনের আগে এই সুযোগ আর কখনও আসবে না।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মহানগর এবং উত্তর চট্টগ্রামে আবারও জনসভা করা হবে বলে আশ্বাস দেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান এবং ওয়াসিকা আয়শা খানম।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

 

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দু’দিনে ভারতে ৯৯ টন ইলিশ রফতানি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৪

সম্পর্কিত খবর