এমএলএম’র নামে ৫০ কোটি টাকার প্রতারণা, র্যাবের অভিযানে আটক ৮
৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:১৯
ঢাকা: সরকারের অনুমোদন ছাড়াই মাল্টি-লেভেল মার্কেটিংয়ের (এমএলএম) নামে প্রায় ৪০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে আনুমানিক ৪৫-৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ ওয়ান হেলথ কেয়ার এবং এ ওয়ান বাজার লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে রাজধানীর মতিঝিলের ইত্তেফাক ভবনের ৫ম তলায় প্রতিষ্ঠানটির অফিসে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে প্রতিষ্ঠানটির এমডিসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
অভিযানে আটককৃতরা হলেন- এ ওয়ান হ্যালথ কেয়ার এবং এ ওয়ান বাজার লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক (অর্থ) মো. ফেরদৌস খান, পরিচালক (প্রশাসন) মো. রেজাউল করিম মিন্টু, পরিচালক (মানবসম্পদ) মো. আবুল কালাম আজাদ, পরিচালক আসাদুল্যাহ দেওয়ান, পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার, গ্রাহক প্রশিক্ষক আজিজ খন্দকার রাহাদ এবং গ্রাহক সংগ্রহকদের সমন্বয়কারী সাহাব উদ্দিন। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৪০-৪৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য-প্রমাণ জব্দ করা হয়েছে।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু অভিযানের বিষয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে এ ওয়ান হ্যালথ কেয়ার এবং এ ওয়ান বাজার লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির মতো গ্রাহক সংগ্রহ করে এমএলএম ব্যবসা করছে। কিন্তু তাদের এরকম ব্যবসায় সরকারের কোনো অনুমোদন নেই। এমনকি তারা যে নামে প্রতিষ্ঠান খুলেছে আদৌ তার কোনো অস্তিত্বও নেই, যা সম্পূর্ণ ভুয়া একটি প্রতিষ্ঠান।’
তিনি বলেন, ‘তারা প্রথমে এ ওয়ান হ্যালথ কেয়ার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনলাইনে ২০-২৫ হাজার গ্রাহক সংগ্রহ করেছিল। এসময় তারা গ্রাহক প্রতি ১০ হাজার টাকা করে সংগ্রহ করে। শুরুতে তারা যেসব গ্রাহককের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করেছিল সেসময় প্রাথমিকভাবে গ্রাহকের জন্য অনলাইনে একটা আইডি অ্যাকাউন্ট দিতো। ওই অ্যাকাউন্টে গ্রাহক প্রথম কিছুদিন তাদের টাকা জমা দেওয়ার বিবরণী থেকে সব তথ্য দেখতে পারতো। কিন্তু কিছুদিন পর প্রতারক চক্রটি এ ওয়ান হেলথ কেয়ার নামের প্রতিষ্ঠানটির সাইট বন্ধ করে দেয়। এবং পরবর্তী সময়ে এ ওয়ান বাজার নামে আরেকটি ওয়েবসাইট খুলে গ্রাহক সংগ্রহ শুরু করে। এখানেও একই কৌশলে তারা গ্রাহক সংগ্রহ করেছে প্রায় ১০-১৫ হাজার। প্রত্যেকের কাছ থেকে সর্বনিম্ম ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৫-২০ হাজার টাকা করে সংগ্রহ করেছে। এমনকি সংগৃহীত গ্রাহকের অবস্থান বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানটিতে শেয়ার কেনার মাধ্যমে পরিচালকের পদও বিক্রি করেছে তারা। এজন্য ৪৬ হাজার একশ’ শেয়ার বিক্রি করেছে ১০৭ জন পরিচালকের কাছে।’
পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘তারা অন্তত ৪০-৪৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ সেইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় প্রতারণা ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।
৫০ কোটি টাকা এ ওয়ান বাজার লিমিটেড এ ওয়ান হেলথ কেয়ার প্রতারণা