ভিক্ষা করে চলতে চাই না, দায়িত্ব পালন করুন— কর কর্মকর্তাদের তাপস
৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:২৩
ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে (ডিএসসিসি) একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও মর্যাদাশীল সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে কর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, সংস্থাটি আগে কীভাবে চলেছে, সেদিকে আমি ফিরে যেতে চাই না। আমি ভিক্ষা করে চলতে চাই না। সঠিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে করপোরেশনকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও মর্যাদাশীল সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ডিএসসিসির আওতাধীন সকল কর কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, ট্রেড লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজার, বাজার সুপারভাইজার, রাজস্ব সহকারীসহ রাজস্ব বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আপনারা জনবল সংকটসহ অনেক সমস্যার কথা বলেছেন, অনেক সংকটের কথা বলেছেন। কিন্তু আমি খুব খুশি হতাম, যদি আপনারা বলতেন, ডিএসসিসির মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে আপনারা নিরলসভাবে পরিশ্রম করবেন। আপনাদের কর্মক্ষেত্র তথা আপনাদের পেশার সম্মান ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাবেন। আপনারা কেউ সেটা বলেননি। আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে, প্রতিকূলতা ছাড়া কোন যাত্রা পথ নেই। সেটা যেমন জীবন সংগ্রামে আছে, তেমনি সব যাত্রাপথেই থাকবে। কিন্তু সে প্রতিকূলতার কারণে কেউ কোনো কিছু অর্জন করতে চেয়ে তা পারেনি, সেরকম নজির নেই। সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই অর্জন হয়ে থাকে।’
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আগে কীভাবে চলছে, আমি সেদিকে ফিরে যেতে চাই না। আমি ভিক্ষা করে চলতে চাই না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দেওয়ার পরে সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থাতেই বলেছিলেন, আমি ভিক্ষুকের জাতি চাই না। আমি চাই বাংলাদেশ স্বয়ং সম্পূর্ণ হোক। আমার লক্ষ্য থাকবে, জাতির পিতার সেই স্বপ্ন ও প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প বাস্তবায়নে আমি ডিএসসিসিকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও মর্যাদাশীল সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলা।’
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের সুবিধার্থে ও রাজস্ব আহরণ বাড়ানোরর লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সব সমস্যা ও সংকটের যথাযথ সমাধান করা হবে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ‘দুষ্টের দমন আর শিষ্টের লালন অব্যাহত থাকবে। যারা ভালো কাজ করবেন, যারা আন্তরিকতা-নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন, আমরা তাদের অবশ্যই মুল্যায়ন করব। আর যারা দুর্নীতি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কোনোরকম ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন তো নেই-ই, এ ব্যাপারে কোনো অলসতাও বরদাস্ত করা হবে না।’
রাজস্ব আদায় তদারকির লক্ষ্যে প্রতি তিন মাস অন্তর সকল কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে পর্যালোচনা সভা করা হবে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘এখন থেকে সকল উপ-কর কর্মকর্তারা প্রতিদিন কর কর্মকর্তাদের কাছে দৈনন্দিন পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবেন। কে কোথায় কী কাজ করেছে, কত আদায় হয়েছে, আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কতটুকু অর্জিত হয়েছে ও কতটুকু হয়নি- এসব তথ্য প্রতিবেদনে থাকতে হবে। এরপর সকল কর কর্মকর্তারা সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে তাদের কাজের পরিপূর্ণ প্রতিবেদন দাখিল করবেন। কাজ করতে গিয়ে কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার মাধ্যমে আমাদের অবহিত করবেন। আমরা চেষ্টা করব তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে।’
রাজস্ব আদায়ের চিত্র দেখতে যেকোনো সময় যেকোনো বাড়ি, স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যেতে পারেন জানিয়ে তাপস বলেন, ‘কোথাও গিয়ে কারও বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, গাফিলতি পরিলক্ষিত হলে, সে সময় কোনো অজুহাত চলবে না। তখন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ডিএসসিসির নবনিযুক্ত প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন একটি সেবামূলক সংস্থা। এই সংস্থাকে জনবান্ধব সংস্থায় পরিণত করতে আপনাদের আন্তরিক চেষ্টা অব্যাহত থাকলে, আমরা এই অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।’
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কর কর্মকর্তা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দায়িত্ব পালন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ভিক্ষা মেয়র