ইয়েমেনের পাশে ২ ব্রিটিশ শিশু, তাদের পাশে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:২২
ইয়েমেনে মানবেতর অবস্থায় দিনযাপন করতে হচ্ছে হাজারও মানুষকে। এমন মানুষদের পাশে কিছুটা হলেও যেন দাঁড়ানো যায়, তার জন্য এগিয়ে এসেছিল দুই ব্রিটিশ শিশু। বাড়ির সামনের রাস্তায় টেবিল পেতে তারা লেমোনেড ও কুকি বিক্রির ‘দোকান’ খুলেছিল।
ইয়েমেনের নিপীড়িত মানুষদের সহায়তা করতে এই শিশুদের উদ্যোগ মন ছুঁয়ে গেছে হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলির। আর সে কারণেই তিনি দাঁড়িয়েছেন এই শিশুদের পাশে। পাঠিয়েছেন অনুদান। তবে তার অঙ্কটা অবশ্য প্রকাশ করেননি।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, পূর্ব লন্ডনের ছয় বছর বয়সী দুই ব্রিটিশ স্কুল শিক্ষার্থী আয়ান মুসা ও মিকাইল ইশা খুব ভালো বন্ধু। গত জুলাইয়ে তারা দাতব্য উদ্দেশ্য নিয়ে ওই দোকান খুলেছিল।
আয়ান মুসার বাবা শাকিল মুসা জানিয়েছেন, সপ্তাহ তিনেক আগে হলিউড সুপার স্টার অ্যাঞ্জেলিনা জোলি একজন এজেন্টের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন তাদের সঙ্গে। বাচ্চারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে রাস্তায় দোকান বসিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছিল, জোলি ঠিক একই উদ্দেশে তাদের জন্য অনুদান দিতে চান বলে জানান ওই এজেন্ট। এ সপ্তাহে ওই অনুদানে অর্থ পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কেবল টাকা-ই নয়, দুই শিশুর জন্য একটি চিঠিও লিখেছেন জোলি। সেই চিঠিতে তাদের মহৎ উদ্দেশ্যের প্রতি সম্মান জানান। আর সশরীরে উপস্থিত থেকে যে লেমোনেড কিনে খেতে পারেননি, তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করেন।
দুই শিশু ইনস্টাগ্রামে সেই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করে পোস্টও দিয়েছে। জোলিকে জানিয়েছে ধন্যবাদ। অন্যদেরও এভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে। মুসা বলছে, তিনি অত্যন্ত অসাধারণ। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় তারকাদের একজন। তার কাছ থেকে এমন সাড়া পাওয়াটা অত্যন্ত উচ্ছ্বাসের বিষয়। তিনি অতুলনীয়।
ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ভিডিওবার্তায় দুই শিশুকে বলতে দেখা গেছে, “হাই অ্যাঞ্জেলিনা। আমি আয়ান ও আমি মিকাইল। আমরা সেই ‘লেমনএইড’ শিশু। আমাদের জন্য তুমি যে অনুদান পাঠিয়েছ, তার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।” জোলি কখনো লন্ডনে এলে তার কাছে সরাসরি লেমোনেড বিক্রি করতে চায়— সেটিও জানিয়েছে তারা।
সুপারস্টার অ্যাঞ্জেলিনা জোলির এমন মানবিক সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো অবশ্য নতুন কিছু নয়। জোলি নিজে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের একজন বিশেষ দূত। এর আগেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সংঘাত ও দারিদ্র্য নিয়ে অনেকবার সোচ্চার হয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের এসব সংঘাতপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম ইয়েমেন। ২০১৫ সাল থেকে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। অভিযোগ আছে, সেখানকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো সমর্থন দিয়ে থাকে।
গত পাঁচ বছরে এই গৃহযুদ্ধে এক লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির প্রায় অর্ধেক জনগণকেই দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে। লাখো নাগরিককে দু’মুঠো খাবারের জন্য চরম সংগ্রাম করতে হয়। এমন মানবেতর পরিস্থিতির মধ্যেই কলেরার মতো বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের প্রাদুর্ভাবও রয়েছে দেশটিতে।