কেরানি আবজালের স্ত্রীর সন্ধানে বিভিন্ন থানায় দুদকের চিঠি
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:৩০
ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের কেরানি আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনার সন্ধানে বিভিন্ন থানায় চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুদকের সচিব মোহাম্মদ দিলোয়ার বখত সাংবাদিকদের একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আবজাল হোসেনকে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করছে। জিজ্ঞাসাবাদে আবজাল হোসেনের আরও বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে আবজালের স্ত্রী রুবিনার সন্ধানে বিভিন্ন থানায় কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আলোচিত কেরানি আবজাল হোসেনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুটি মামলা করেছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আবজাল একা আসামি। আর অপর মামলায় আবজালসহ তার স্ত্রীকেও আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২৬ আগস্ট আফজাল হোসেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে আইনজীবী শাহিনুর ইসলামের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। দুদকের পক্ষ থেকে মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত বছর ২৭ জুন দুদকের উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ কার্যালয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন, মানিলন্ডারিং এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দুটি করেন।
মামলা দুটিতে আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে ৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৬১ হাজার ৪৯৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় দীর্ঘ সময় ধরে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে ২৮৪ কোটি ৫১ লাখ ১৩ হাজার ২০৭ টাকার মানি লন্ডারিং অপরাধের অভিযোগও করা হয়েছে।
আবজালের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪ কোটি ৭৯ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি দুদকে পেশ করা সম্পদ বিবরণীতে দুই কোটি ২ লাখ ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৫ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে। আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানম ও আবজালকে যৌথভাবে আসামি করে করা মামলায় ৩১ কোটি ৫১ লাখ ২৩ হাজার ৪৪ টাকার সম্পদের কথা বলা হয়েছে। তিনি দুদকের কাছে ৫ কোটি ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৯২৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়, আবজালের নামে থাকা সম্পদের চেয়ে তার স্ত্রীর নামে সম্পদের পরিমাণ বেশি। অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে তিনি স্ত্রীর নামে সম্পদ করেছেন। এসব সম্পদের বৈধ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এজাহারে আবজালের নামে ২০ কোটি ৭৪ লাখ ৩২ হাজার ৩২ টাকার মানিলন্ডারিং অপরাধের প্রমাণ মিলেছে। রুবিনা খানমের বিরুদ্ধে ২৬৩ কোটি ৭৬ লাখ ৮১ হাজার ১৭৫ টাকার মানি লন্ডারিং অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ফলে আদালতে দুদক আবজালের ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। কিন্তু আদালত ২ মামলায় ৭দিন করে মোট ১৪দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করে। আর ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে আবজালকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক।