‘গাঙচিল বাহিনী’র প্রধান সালাউদ্দিন সাভারে অস্ত্রসহ গ্রেফতার
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:০২
ঢাকা: সাভার থানার আমিনবাজার এলাকার সালেহপুরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গাঙচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪ এর একটি টিম।
শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ১ টি ম্যাগাজিন, ২ রাউন্ড গুলি, ১৯০ গ্রাম হিরোইন, ৫০০ পিস ইয়াবা এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় তথ্যটি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘২০০০ সাল থেকে সাভার আমিন বাজার ও তার আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার মধ্য দিয়ে উত্থান হয় গাঙচিল বাহিনীর। যার প্রধান ছিল আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার। বেশিরভাগ সময় পানিবেষ্টিত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এর নাম দেওয়া হয় গাঙচিল বাহিনী। ২০১৭ সালের পর সালাউদ্দিন ওরপে এমপি সালাউদ্দিন নেতৃত্বে এসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। এ বাহিনী মূলত আমিন বাজার, গাবতলী, ভাকুর্তা, কাউন্দিয়া, বেড়িবাঁধ, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, খুন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ধর্ষ গাঙচিল বাহিনী ২০০২ সালে সাভার থানার ১ জন এসআইকে হত্যা, ২০০৭ সালে ২ জন র্যাব সদস্যকে হত্যা, দিয়াবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির অস্ত্রলুট এবং আমিন বাজার এলাকায় নৌ-টহল দলের অস্ত্র লুটের সাথে জড়িত ছিল। এ বাহিনী তুরাগ ও বুড়িগঙা নদীর বালুভর্তি ট্রলার, ইটের কার্গোতে ডাকাতি ও আমিন বাজার এলাকার শতাধিক ইটভাটা থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করতো। এছাড়াও এলাকার প্রভাবশালীদের টার্গেট করে গাঙচিল বাহিনীর সদস্যরা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করতো। চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই সহ তুরাগ আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুই ধারে অধিপত্য বিস্তার ছিল এই বাহিনীর প্রধান কাজ।’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায় তারা সবসময় নদীতে ও নদীর তীরবর্তী এলাকায় তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এবং বেশিরভাগ সময় নদীপথে যাতাযাত করে। তাদের যাতাযাতের বাহন ছিল ডাবল ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। তারা সাভার-আমিনবাজার এলাকার বিভিন্ন ইটভাটার মালিক ও তুরাগ-বুড়িগঙ্গা নদীতে চলাচলকারী বালু ভর্তি ট্রলার মালিকের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা আদায় করতো। চাঁদা না দিলে নেমে আসতো ভয়াবহ বিপদ।’
এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় খুন, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারির একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলেও জানান এডিআইজি মোজাম্মেল হক।