মিন্নিসহ ৬ জনের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে
৪ অক্টোবর ২০২০ ১১:০৭
ঢাকা: বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী মিন্নিসহ মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ছয় আসামির ডেথরেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) জন্য হাইকোর্টে এসে পৌছেছে। রোববার (৪ অক্টোবর) পোনে ১১টায় হাইকোর্টের আদান-প্রদান শাখায় এসে পৌঁছায়।
বরগুনা আদালতের জারি কারক জাহাঙ্গীর আলম পিকু আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের মাধ্যমে নিরাপত্তাসহ রায়ের কপিসহ মামলার যাবতীয় নথি নিয়ে আসেন। এ সময় হাইকোর্টের আদান-প্রদান শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা কে এম ফারুক হোসেন নথি গ্রহণ করেন।
নিয়ম অনুযায়ী সাধাণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পূর্বে হাইকোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হয়। সে হিসেবে মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। তারই আলোকে এ মামলার রায়ের কপি, সাক্ষীদের বক্তব্যসহ মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টে এলো।
ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল দায়ের করে থাকেন। এরপর নিয়ম অনুযায়ী এ মামলার পেপারবুক তৈরি হবে। এরপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মামলাটি শুনানির জন্য যে বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন সেই বেঞ্চে মামলাটি শুনানি হবে।
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ৩০ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
রায়ে প্রাপ্ত বয়স্ক ১০ জনের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড ও চারজন খালাস পেয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি, রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), হাসান বন্ড (১৯)। এছাড়া মুসা বন্ড (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুনকে (২১) খালাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া মামলার অন্যতম আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক রয়েছে। এছাড়া মিন্নি উচ্চ আদালত থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন নিয়ে বাবার বাড়িতে ছিলেন। আর বাকি আসামিরা কারাগারে ছিলেন। এর আগে এ বছরের ১ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। আর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৮ জানুয়ারি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ ফাঁস হলে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তোলে।
ওই মামলায় প্রথমে মিন্নিকে সাক্ষী হিসেবে দেখানো হলেও, পরে এক আসামির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আসামি হিসেবে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার চার্জশিটে পুলিশ আরও ১৪ জনকে অভিযুক্ত করেছিল। তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিচার বরগুনার শিশু আদালতে আলাদাভাবে চলছে।