নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়তে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ওয়াশিংটন
৬ অক্টোবর ২০২০ ১৬:১৬
ঢাকা: নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়তে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে এবং কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দুদেশ যোগাযোগ, বিনিয়োগ, জনস্বাস্থ্য, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে আরও দৃঢ় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশিত যৌথ বিবৃতি থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এমপি এবং অর্থনীতি, জ্বালানি এবং পরিবেশ সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি কেইথ ক্রাচ গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৈঠকে নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন। বৈঠকটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৈঠক শেষে ৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র সরকার যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে। যৌথ বিবৃতিতে দুই দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরও শক্তিশালী করতে সামনের দিনগুলোর পরিকল্পনাসহ মোট আট দফা ঘোষণা করা হয়।
যৌথ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হবে, উল্লেখ করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপদ, উন্মুক্ত, স্বাধীন, অর্ন্তমুখী এবং শান্তিপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়তে দুদেশ একসঙ্গে কাজ করবে, যাতে নিজেদের ভিশন বাস্তবায়ন করা যায়। চলমান সময়ে কোভিড-১৯ জনিত ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দুদেশের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
নিরাপদ অর্থনীতির জন্য জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সহযোগিতা শক্তিশালী করতে হবে, উল্লেখ করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থনীতির ক্ষতি দ্রুত গতিতে পুষিয়ে নিতে হলে নারী ও শিশুদের সুরক্ষাসহ কর্ম পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এই সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য দ্বিপক্ষীয় এবং বৈশ্বিক সহযোগিতা আরও দৃঢ় করতে হবে। পাশাপাশি চিকিৎসা বিদ্যা, জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তায় সক্ষমতা বাড়ানো, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে দুইদেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে এবং এ জন্য দুই দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যৌথ কমিটি গঠন করতে হবে, যাতে নিয়মিতভাবে এই বিষয়গুলো পর্যলোচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া যায়।
বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার করতে হবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পুনরুদ্ধার কৌশলে সেবাখাত ও অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে, যাতে মানুষের চাহিদা বাড়তে সহায়তা করে। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং রফতানি বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
প্রযুক্তি যোাগযোগ নীতিতে জোর দিতে হবে উল্লেখ করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপদ এবং আস্থাশীল ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সহজে বাণিজ্য এবং যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।
ব্লু ইকনোমি খাতে সহযোগিতা বাড়াতে হবে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সাগরের সম্পদ কাজে লাগাতে বিজ্ঞান, উদ্ভাবনি ব্যবস্থাপনা, সঠিক কর্মপন্থা, কার্যকর অংশীদারিত্ব এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। কেন না এতে অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যত আরও নিরাপদ হবে।
জ্বলানি খাত বাংলাদেশের ভবিষ্যত উজ্জ্বল করতে পারে উল্লেখ করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি বিষয়ক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই নিবিড়। এই সহযোগিতামূলক সম্পর্ক সামনের দিনগুলোতে আরও মজবুত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় যে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও নিবিড় করতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র আকাশ পথে পণ্য যোগাযোগ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ ছাড়া নিরাপদ ভবিষ্যত গড়তে দুইদেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলে যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।