Monday 30 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আইনপ্রণেতারা প্রশ্রয় দিলে ধর্ষণের বিচার হবে কিভাবে?’


৬ অক্টোবর ২০২০ ২১:২০
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: দেশব্যাপী ধর্ষণের ঘটনা ‘মহামারি’ আকার ধারণ করলেও আইনপ্রণেতাদের ‘নিশ্চুপ’ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নারী অধিকার নেত্রীরা। তারা বলছেন, একের পর এক ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন হয়ে গেলেও আইনপ্রণেতারা কোনো কথা বলছেন না। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে তারা ধর্ষক-নির্যাতকদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। আর এরকম হলে কখনোই ধর্ষণের বিচার হবে না, ধর্ষণ বন্ধও হবে না।

মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নারী নেত্রীরা এসব কথা বলেন। সারাদেশে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মুসলেম বলেন, ‘ধর্ষণকারীরা কোন রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আছে, তা দেশবাসী জানে। অথচ আমাদের আইনপ্রণেতারা ও প্রশাসন জানে না? আজকে তারা নিশ্চুপ, প্রশ্ন তো জাগেই। জাতীয় সংসদের স্পিকার, যিনি নোয়াখালীর মেয়ে, তিনি সংসদের নেতা হিসেবে কিছু বলেছেন? তার কি কোনো কিছুই বলার নাই?

‘ধর্ষকদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যদি আজ কথা না বলি, তাহলে এই ধর্ষণের মহামারি বন্ধ হবে না,’— বলেন তিনি।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফৌজিয়া মুসলেম বলেন, ‘আজ নোয়াখালীতে সেই নারী ধর্ষণের শিকার হননি, ধর্ষণের শিকার হয়েছে প্রশাসন, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন আইনপ্রণেতারা। এ ঘটনাকে আজ এভাবেই বিচার করতে হবে নারীদের। আইনপ্রণেতারা যতদিন এসবের উত্তর না দেবেন, ততদিন ধর্ষণের মহামারি বন্ধ হওয়া সম্ভব না।’

বেগমগঞ্জের ঘটনায় কথিত দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার প্রধান অভিযুক্ত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সবাই। কিন্তু অভিযোগে দেলোয়ারের নাম নেই। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আলোচনায় যুক্ত হয়ে স্থানীয় নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ সেই দেলোয়ার বাহিনীর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততাও অস্বীকার করেছেন।

এ প্রসঙ্গগুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনপ্রণেতাদের বাধ্য করতে হবে আমাদের সামনের জবাবদিহিতা করতে। তার এলাকায় কোনো ধর্ষণ হলে তিনি সংসদে তার জবাবদিহিতা করবেন। সংসদকে জবাবদিহিতার জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। এই জায়গায় যদি আমরা না আসতে পারি, তাহলে আমরা কোনো কিছুর বিচার করতে পারব না।

আইনের যথাযথ প্রয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশ্রয়ের প্রসঙ্গ টেনে ফৌজিয়া মুসলেম আরও বলেন, আজ সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে হয়, সবকিছুর মূলে রয়েছে আইনের প্রয়োগ না হওয়াটা। কিন্তু আইনের প্রয়োগ হবেই বা কিভাবে, যদি আইনপ্রণেতারাই এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে? সেক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগ করাটাই খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, প্রতিদিন আমাদের নারীদের সুন্দর স্বপ্নগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আজ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যাদের, শপথ নিয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন যারা, তারা নিশ্চুপ কেন? তারা যদি এই ভেবে স্বস্তিতে থাকেন যে অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের ধর্ষণের হার অনেক কম, তাহলে তো ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত হবে না।

ধর্ষণকারীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রশ্রয় না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মালেকা বানু বলেন, রাজনৈতিক সুবিধা ও স্বার্থের জন্য তরুণ সমাজকে যেন ব্যবহার করা না হয়। তার বদলে গঠনমূলক কাজে যেন তরুণদের নিয়োজিত করা যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

ধর্ষণের বিচার নারী অধিকার প্রতিবাদ সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর