‘২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৬ শতাংশ’
৮ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৫৫
ঢাকা: কোভিড-১৯-এর কারণে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে সেটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি বছরে যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে তাতে ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলবে বাংলাদেশ। প্রবৃদ্ধি অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ায় সব থেকে খারাপ অবস্থা ভারতের; মাইনাস ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে একই সময়ে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হবে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯-এর ধ্বংসাত্মক প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ডুবে রয়েছে। অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মীদের ওপর অযৌক্তিক খড়গ নেমেছে। লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। ফলে দক্ষিণ এশিয়াকে চরম দারিদ্রতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। এসব কারণে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির ওপর যে হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হয়ছে তাতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সরকারের লক্ষের চেয়ে অনেক কম হবে। কেননা সরকারের লক্ষ্য রয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের মতে কয়েক দশকে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে এমন কালো ছায়া নামেনি। অথচ কোভিড-১৯-এর আগে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছিল, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। এর পরে ২০১৯-২০ অর্থবছরে পূর্বাভাস দেয় ২ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে দেখা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি অর্জন করবে মালদ্বীপ ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, এর পর শ্রীলঙ্কা ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। একই সময়ে আফগানিস্তান ২ দশমিক ৫, ভুটান ১ দশমিক ৮, নেপাল শূন্য দশমিক ৬ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কোভিড-১৯ এর প্রভাবে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে মজুরি কমে যাবে। ফলে বেসরকারি ভোগব্যয় কমে যেতে পারে। তৈরি পোশাকের চাহিদা তৈরি হবে কি না সংশয় দেখা দিয়েছে। এসব কারণে বিনিয়োগ ও রফতানিতে চরম বিপত্তি দেখা দিতে পারে।
এদিকে সাম্প্রতিক রেমিট্যান্স বাড়লেও তা সাময়িক মনে করছে বিশ্বব্যাংক। এর কারণ ব্যাখ্যায় বিশ্বব্যাংক বলেছে, করোনার কারণে ফেরত আসা প্রবাসীদের সঞ্চয়ের কারণে রেমিট্যান্স এখন বাড়ছে। তবে আগামীতে এ ধারা নাও থাকতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯ প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ক্ষতি করেছে। ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মীদের ওপর খড়গ নেমেছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দাঁড়িয়েছে হঠাৎ চাকরির ক্ষতি হওয়া এবং মজুরি কমে যাওয়া। তাৎক্ষণিক ত্রাণ সহায়তা মহামারির প্রভাবকে কিছুটা কমিয়েছে।’
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেছেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। তবে প্রভাবগুলো কমানোর জন্য সরকার যে নীতি নিয়েছে, সেগুলো সঠিক দিকে রয়েছে।’