বাগেরহাট: বাগেরহাটে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ গুম করার সময় এক কনস্টেবলকে আটক করেছে শরণখোলা থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে পারিবারিক কলহের জের ধরে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন।
নিহত জোসনা বেগম অন্তঃসত্তা ছিলেন। এ ঘটনায় তার পরিবার শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত গভীর রাতে শরণখোলা উপজেলার তাফালবাড়ী ক্যাম্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনী উপজেলার বড়ধাল গ্রামের আব্দুল লতিফ গাজীর ছেলে। শরণখোলা উপজেলার তাফালবাড়ী পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাদ্দামের প্রথম স্ত্রী সাতক্ষীরায় সাদ্দামের মা-বাবার কাছে থাকে। জোসনা বেগম (৩০) নামে এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। জোসনা বেগমের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলায়। জোসনা ও তার আগের ঘরের সন্তানকে নিয়ে সাদ্দাম তাফালবাড়ী পুলিশ ফাঁড়িসংলগ্ন ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, শুক্রবার জোসনার বড় সন্তানকে নিয়ে তার সঙ্গে সাদ্দামের ঝগড়া হয়। সাদ্দাম স্বীকার করেছে, ওই কলহের জের ধরেই জোসনাকে সে হত্যা করেছে। এরপর জোসনার লাশ টুকরা টুকরা করে কেটে বস্তাবন্দি করে সে। গভীর রাতে বস্তাটি মাটিতে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে সাদ্দামকে আটক করে।
খবর পেয়ে রাতেই বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন। পরে পুলিশ সুপার পংকজ জানান, সাদ্দামকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য সে স্বীকার করেছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।
জোসনার বোন সারাবাংলাকে বলেন, আমার বোনটা গর্ভবতী ছিল। তার পেটে ছয় মাসের একটা বাচ্চা ছিল। সাদ্দাম আমার বোনটাকে টুকরো টুকরো করে হত্যা করেছে। তার পেটের বাচ্চাটাকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই। সাদ্দামের যেন ফাঁসি হয়— আমরা শুধু এইটুকুই চাই।
এদিকে, নিহত জোসনা বেগমের মা বাদী হয়ে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) সকালে পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দামকে আসামি করে শরণখোলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আটক সাদ্দামকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন ওসি সাইদুর।