Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, অধ্যাদেশ জারি মঙ্গলবার


১২ অক্টোবর ২০২০ ১২:৩১

ঢাকা: ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধনের প্রস্তাব তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে খসড়ার চূড়ান্ত নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতি এই আইনটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করতে পারেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

দেশে ধর্ষণজনিত হত্যায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকলেও শুধু ধর্ষণের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এবার এ শাস্তিকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড করা হলো।

সম্প্রতি নোয়াখালীতে এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রাজধানীসহ দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের ঝড় উঠে। ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব ওঠে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে।

এমন পরিস্থিতিতে সরকার এ আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ দেশে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিচার হয়।

এ আইনের ৯ (১) ধারায় বলা আছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

আর ৯ (২) ধারায় বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

বিজ্ঞাপন

গতকাল রোববার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০’ সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আইনটি পাস হলে তা শুধু প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য শিশু আইন-২০১৩’র বিধান অনুসরণযোগ্য হবে।

এ দিকে সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যরা সচিবালয় থেকে ভার্চুয়াল এই সভায় যোগ দেন।

মামলাটি কতদিনের মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,  ‘এটি ১৮০ দিনের মধ্যে সম্পন্নের সিদ্ধান্ত আছে। বিচার পদ্ধতির সবকিছুই এর মধ্যে উল্লেখ রয়েছে। নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল এটি করবে এবং শেষ করতে হবে ১৮০ দিনের মধ্যে। বিচারক যদি কোনো কারণে ট্রান্সফার হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও বিলম্ব হয় অনেক ক্ষেত্রে। তবে কোনো বিচারক চলে গেলে তিনি মামলা যে অবস্থায় রেখে যাবেন সে অবস্থা থেকে মামলা চালিয়ে যেতে হবে।’

তিনি জানান, এখন সংসদের অধিবেশন নেই এবং আশু ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে তাই রাষ্ট্রপতির প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ প্রদান করতে পারবেন। ভেটিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ফাইনাল কার্যকর হয়ে যাবে। তিনি জানান, এ সংশোধনী শুধু আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নয়, বিভিন্ন দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে আমরা দেখেছি। আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিসহ সবকিছু মিলিয়েই এ সিদ্ধান্ত এসেছে। সরকারের পক্ষ থেকেও এটি আলোচনায় এসেছে। মানুষের অ্যাওয়ারনেসটাই গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞাপন

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন,  ‘এই সংশোধনীর ফলে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে ব্যাপক ক্যাম্পেইন হচ্ছে। এর ফলে একটি পজিটিভ ইম্প্যাক্ট পড়বে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যারা এই ক্রাইমটি করবে তারা চিন্তা করবে এতে তো মৃত্যুদণ্ডের আদেশ রয়েছে। সে কিন্তু একটু হলেও ভীতিতে থাকবে।

তিনি বলেন, এখানে ক্ষতিপূরণের বিষয়ও রয়েছে, বিচারকরা যেন সেদিকে নজর দেন। এটাতে আইন আছে ১ লাখ টাকার। কিন্তু তার বাইরেও কিন্তু ক্ষতিপূরণের বিধান আছে। যেমন ১৫ ধারায় আছে অর্থদণ্ডের বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যেন দণ্ডিত ব্যক্তি বা তার বিদ্যমান সম্পদ থেকে আদায় করা যাবে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

ধর্ষণ ধর্ষণের বিচার মৃত্যুদণ্ড সর্বোচ্চ শাস্তি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর