সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামে এক দম্পতি ও তাদের দুই সন্তানসহ চার জনকে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি তদন্তে কাজ শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুলকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানি বা আদেশের দিনক্ষণ এখনো জানাননি আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ভোরে খলসি গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে হ্যাচারি মালিক শাহিনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ছেলে সিয়াম হোসেন মাহি (৯) ও মেয়ে তাসনিমকে (৬) তাদের নিজ বসত ঘরে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন শাহিনুরের শাশুড়ি কলারোয়ার ওফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজির স্ত্রী ময়না বেগম।
আরও পড়ুন- কলারোয়ায় ঘরে ঢুকে এক পরিবারের ৪ জনকে গলা কেটে হত্যা
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারান চন্দ্র পাল জানান, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আাদলতে পাঠানো হয়েছে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি। আর সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, আজ (শুক্রবার) থেকেই তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন তিনি।
৪ খুনের এ ঘটনায় নিহত শাহিনুরের ছোট ভাই রায়হানুলকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত শুনানি নিয়ে এ বিষয়ে আদেশ দেবেন। অন্যদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক আব্দুর রাজ্জাক ও আসাদুলকে শুক্রবার বিকেলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শাহিনুর, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন , ছেলে ব্রজবক্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন মাহি ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসনিম সুলতানার মরদেহ ব্রজবাকসা গ্রামে শাহিনুরের মামা আবদুল কাদেরের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
একই পরিবারের চার জনকে গলা কেটে হত্যার এ ঘটনায় এখনো ওই বাড়িতে কৌতূহলী মানুষের ভিড় কমেনি। সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের ধারে পুরো বাড়ি ও পাড়াজুড়ে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ঘাতকদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া চার মাসের শিশু মারিয়া সুলতানার দায়িত্বভার নিয়েছেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল। তিনি ওই শিশুর চিকিৎসা ও বেড়ে ওঠার সব ব্যয়ভার বহন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। শিশুটি এখন হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের হেফাজতে রয়েছে।
কলারোয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হারান চন্দ্র পাল বলেন, চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডার মামলাটির তদন্তভার সিআইডি’র হাতে গেলেও তাদেরকে তদন্তে সহযোগিতা করতে পুলিশ কাজ করছে।