Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নৌযান ধর্মঘট: চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গর-ঘাটে পণ্য খালাস বন্ধ


২০ অক্টোবর ২০২০ ১৫:৫২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকদের চলমান ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহন ও বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে পণ্য খালাস কার্যক্রম। লাইটারেজ জাহাজগুলো পণ্য খালাসের জন্য না যাওয়ায় বর্হিনোঙ্গরে অলস বসে আছে বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য নিয়ে আসা মাদার ভ্যাসেলগুলো। কর্ণফুলী নদীতে অলস বসে আছে কয়েক’শ বেশি লাইটারেজ জাহাজ। এতে বড়ো ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষতির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

তবে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে জাহাজে কনটেইনার ওঠানামা স্বাভাবিক আছে বলে বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

১১ দফা দাবিতে সোমবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডেকেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন। এরপর থেকে সারাদেশে পণ্য পরিবহনকারী নৌযান চলাচল বন্ধ আছে। তাদের দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস ও মালিক কর্তৃক খাদ্য ভাতা প্রদান, বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, ২০১৬ সালের গেজেট অনুসারে বেতন দেওয়া, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা করা।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বন্দরের ভেতরে জেটিতে কাজ স্বাভাবিক আছে। ইয়ার্ড থেকে কনটেইনার খালাস হচ্ছে। জাহাজে কনটেইনার ওঠানামা স্বাভাবিক আছে। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আউটারে কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। খালাস তো বন্ধ করে দিয়েছে, পণ্য নিয়ে লাইটারেজগুলোও কোথাও যাচ্ছে না।’

লাইটারেজ জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন সেলের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অধীন প্রায় দেড় হাজার লাইটারেজ জাহাজ আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ জাহাজ সিরিয়ালে আছে। একশ’র মতো জাহাজ লোডিং পয়েন্টে আছে। বাকিগুলো দেশের বিভিন্ন ঘাটে আছে। মোট কথা, জাহাজগুলো যেখানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায়ই অপেক্ষমান আছে। ধর্মঘটের কারণে কাজ হচ্ছে না কোথাও।’

চতুর্থ দফায় সারাদেশে পণ্যবাহী নৌযান ধর্মঘট

চট্টগ্রাম ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী শফিক আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যারা জাহাজের মালিক আছি, আমরা তো খালাস করার জন্য প্রস্তুত আছি। আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু শ্রমিকরা যদি জাহাজ না চালায়, আমরা কি করতে পারি? তবে মাদার ভ্যাসেলগুলো যদি পণ্য নিয়ে বসে থাকে তাদের তো ডেমারেজ গুণতে হবে। তাদের এজেন্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

বিজ্ঞাপন

দেশের ৭৫ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয় নৌ পথে। মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য নিয়ে লাইটারেজ জাহাজগুলো ঘাটে এবং ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, নরসিংদীসহ আরও কয়েকটি জেলার বিভিন্ন নদীবন্দরে পৌঁছে দিয়ে আসে। ধর্মঘটের কারণে সেই পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘এই ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে বাজারে প্রভাব পড়বে। বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাবে।’

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ধর্মঘটের কারণে প্রায় ৩ হাজার লাইটারেজ জাহাজ বসে আছে। আমরা বারবার আমাদের দাবির কথা বলে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবির প্রতি কোনো ধরনের দৃষ্টি দেওয়া হয়নি। এই অবস্থায় আমরা ধর্মঘট ডাকতে বাধ্য হয়েছি।’

ধর্মঘটে অচল পণ্য খালাস লাইটারেজ জাহাজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর