Friday 11 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে যুবলীগে বিরোধ, শেখ রাসেলের জন্মদিনের সভায় হট্টগোল


২২ অক্টোবর ২০২০ ১৯:০১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগে বিভক্তির জেরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সন্তান শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও হট্টগোলের  সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আয়োজন তড়িঘড়ি করে শেষ করে সভাস্থল ছাড়েন যুবলীগ নেতারা।

বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর দারুল ফজল মার্কেটের দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। এসময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল।

বিজ্ঞাপন

প্রয়াত শেখ রাসেলের জন্মদিনকে ঘিরে এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গত প্রায় একবছর ধরে চলা চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের বিভক্তি দৃশ্যমান হয়েছে। কমিটি গঠনের সাত বছরের মাথায় এসে অসাংগঠনিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে চার যুগ্ম আহ্বায়ক সম্মিলিত অবস্থান নিয়েছেন। এরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমন। এই বিরোধের জেরে আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসহ ওয়ার্ড-থানা কমিটির নেতাকর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুকে বাদ দিয়ে আলাদাভাবে শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা আহ্বান করেন চার যুগ্ম আহ্বায়ক। এ উপলক্ষে উভয়পক্ষের প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী দারুল ফজল মার্কেটে জড়ো হন।

নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সভা শুরুর আগেই আহ্বায়ক সাহেব সংগঠনবর্হিভূত লোকজনকে দারুল ফজল মার্কেটের নিচে জড়ো করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, আমরা যাবার সময় বাধা দেওয়া। কিন্তু আমরা চারজন যুগ্ম আহ্বায়ক বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে একসঙ্গে সেখানে যাই। আমরা যখন সভা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখনই দেখি আহ্বায়ক দলবল নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন। এখানে উনার আসার কথা ছিল না। কিন্তু উনি অনাহুতভাবে ঢুকে পড়েন। এরপর পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সংঘাত এড়াতে উনিসহ আমরা পাঁচজনই দ্রুত বক্তব্য দিয়ে সভা শেষ করে চলে আসি।’

বিজ্ঞাপন

উপস্থিত যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহিউদ্দিন বাচ্চু সভাস্থলে ঢোকার সময়ই পাল্টাপাল্টি স্লোগান শুরু হয়। তিনি ঢুকেই চার যুগ্ম আহ্বায়কের কাছে দলীয় কার্যালয়ে কেন আলোচনা সভার আয়োজন করা হল সেটা জানতে চান। এসময় তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়।

যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত একবছর ধরে আহ্বায়ক সাহেব আমাদের না জানিয়ে নগর যুবলীগের কর্মসূচি দিচ্ছেন এবং একাই তিনি সেটা পালন করছেন। তাকে বারবার বলেছি, কিন্তু তিনি সংশোধন হননি। আমরাও তো রাজনীতি করি। আমরা তো আর বসে থাকতে পারি না। সেজন্য আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন, প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের মৃত্যুদিবস আলাদাভাবে পালন করেছি। আজকের (বৃহস্পতিবার) প্রোগ্রামও ছিল আমাদের, উনি অনাহুতভাবে সেখানে ঢুকে যান সভা পণ্ড করার উদ্দেশ্য নিয়ে। উনার সঙ্গে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রণি, নগর ছাত্রলীগের ইয়াছিন আরাফাত কচিসহ সংগঠনের বাইরের অনেকে ছিল। আমরা কোনো ধরনের সংঘাত সৃষ্টির সুযোগ উনাকে দিইনি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সভা শেষ করেছি।’

নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী যুবলীগের বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে জানান খোকা।

জানতে চাইলে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু সারাবাংলাকে বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ে প্রোগ্রাম হবে, সেখানে আহ্বায়ক হিসেবে আমার থাকার অধিকার অবশ্যই আছে। কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাইরে কোনো প্রোগ্রাম করে সেটা ভিন্ন বিষয়। আর করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর আমি ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। সেসময় অনেকে ঘর থেকে বের হয়েছেন, অনেকে বের হননি। তার অর্থ এই নয় যে, আমি তাদের বাদ দিয়ে প্রোগ্রাম করেছি।’

ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে সভায় উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রনি-কচি এরা তো ছাত্রলীগ করত বা এখনও করে। ছাত্রলীগের পর তো এরা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ কিংবা আওয়ামী লীগই করবে। এরা তো আমাদেরই কর্মী, জামায়াত-শিবিরের তো নয়। তাদের সঙ্গে নেওয়ার মধ্যে অপরাধ কোথায়।’

স্থানীয় কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশ থাকে। আমরা কোনো উত্তেজনা কিংবা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখিনি।’

২০১৩ সালের ১৩ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয় কেন্দ্র থেকে। ওই কমিটিতে মহিউদ্দিন বাচ্চুকে আহ্বায়ক ও দেলোয়ার হোসেন খোকা, দিদারুল আলম, ফরিদ মাহমুদ ও মাহবুবুল হক সুমনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। এই পাঁচজনই প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। তিনমাসের জন্য গঠিত ওই আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ সাতবছর পার হয়েছে।

আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম টপ নিউজ যুবলীগ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বিএফইউজে নির্বাচন ২৮ ফেব্রুয়ারি
১০ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:০০

সম্পর্কিত খবর