হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান ও দেহরক্ষীর ১ বছরের কারাদণ্ড
২৬ অক্টোবর ২০২০ ২০:০৮
ঢাকা: বাসায় অভিযান শেষে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম এবং তার দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদকে একবছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে তাদের দু’জনকে এই সাজা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাদের গ্রেফতারও করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত দু’জনের মধ্যে ইরফান নিজেও জনপ্রতিনিধি। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অভিযান শেষে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের মুখপাত্র এবং আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। এর আগে, সোমবার দুপুর থেকে ইরফান সেলিমের চকবাজারের ওই বাড়িতে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান শুরু করে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম অভিযানে নেতৃত্ব দেন। অভিযানে বাসাটি থেকে ওয়াকিটকি, বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রিক ডিভাইস, অস্ত্র এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার পাওয়া গেছে। ইরফান সেলিম ও জাহিদকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দু’জনের প্রত্যেককে একবছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-
- হাজী সেলিমের ছেলের নামে মামলায় প্রতিবেদন ৩০ নভেম্বর
- নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর: হাজী সেলিমের গাড়িচালক রিমান্ডে
- নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধর: এমপি হাজি সেলিমের ছেলে গ্রেফতার
- ইরফান সেলিমের বাসায় বিপুল পরিমাণ ওয়াকিটকি-ইলেকট্রনিক ডিভাইস
আশিক বিল্লাহ আরও জানান, অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় ইরফান ও জাহিদের নামে দুইটি মামলাও দায়ের করা হবে।
এর আগে, অভিযান চলাকালে ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানিয়েছিলেন, সাদা রঙের ৯ তলা ওই বাড়ির তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ইরফান সেলিম থাকেন। ওই দুই তলায় একটি এয়ারগান, একটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, ৩৮টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার পাওয়া গেছে। যে দুইটি অস্ত্র পাওয়া গেছে, তার লাইসেন্স নেই এবং কালো রঙের যেসব ওয়াকিটকি পাওয়া গেছে, সেগুলো কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহারের অনুমতি আছে বলে জানিয়েছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট।
এর আগে, রোববার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় হাজী সেলিমের গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সোমবার ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ওয়াসিফ। মামলায় হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, প্রোটকল অফিসার এ বি সিদ্দিক দিপু, মোহাম্মদ জাহিদ ও মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে কলাবাগানের দিকে যাচ্ছিলেন। ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো একটি কালো রঙের ল্যান্ড রোভার গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৫৭৩৬) পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়।
ওয়াসিফ ও তার স্ত্রী ধাক্কা সামলে মোটরসাইকেল থেকে নামেন। এসময় গাড়ি থেকে জাহিদ, দিপু ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিন জন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে নেমে আসেন এবং মারধর শুরু করে। তারা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ ও তার স্ত্রীকে ‘উঠিয়ে নেওয়া ও হত্যা’র হুমকি দেয় বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
পরে ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো হলে সংসদ সদস্যের গাড়ি ফেলে মারধরকারীরা পালিয়ে যান। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গাড়ি ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তার মোটরসাইকেল ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যায়।
আশিক বিল্লাহ ইরফান সেলিম কারাদণ্ড টপ নিউজ ভ্রাম্যমাণ আদালত র্যাব সারওয়ার আলম হাজী সেলিম