দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান
২৮ অক্টোবর ২০২০ ১৪:৪৯
ঢাকা: পবিত্র সংবিধান এবং দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলার জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে সেনাবাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, বন্ধুত্ব চাই, বৈরিতা চাই না, যুদ্ধ চাই না। কারণ যুদ্ধের যে ভয়াবহ রূপ তা নিজের চোখে দেখা আছে। কাজেই আর সে ধরনের সংঘাতে আমরা জড়িত হতে চাই না। কিন্তু যদি কখনো আক্রান্ত হই, সেটা মোকাবিলা করার মতো শক্তি যেন আমরা অর্জন করতে পারি, সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চাই এবং সেভাবে তৈরি থাকতে চাই।’
বুধবার (২৮ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালী লেবুখালী শেখ হাসিনা সেনানিবাসে আটটি ইউনিট-সংস্থার পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে পটুয়াখালির লেবুখালী শেখ হাসিনা সেনানিবাস যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে লেবুখালিতে বক্তব্য রাখেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
সেনাবাহিনীর উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে নানামুখী পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী জনগণের সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনী জনগণের বাহিনী। এদেশের উন্নতি হলে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পরিবারের উন্নতি হবে। সেকথা মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
করোনাকালীন সময়ে দেশের মানুষের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাঁড়ানোর জন্য সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ জানান এবং পাশাপাশি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা এই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সম্পূর্ণ বঞ্চিতই ছিলাম। কাজেই সেখানেই আমাদের একটা এখন ডিভিশন হল।’ সূদুরপ্রাসারী কর্ম পরিকল্পনার আলোকে প্রাকৃতিক শোভাকে নষ্ট না করে পরিবেশবান্ধব সেনানিবাস গঠনের পরিকল্পনার জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
এই এলাকায় সেনানিবাস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নসহ সামাজিক ও অর্থনীতিক উন্নয়নেও প্রাণ সঞ্চার করবে। বরিশাল অঞ্চলের মানুষের কাছে নতুন আশা জোগাচ্ছে এবং আপনাদের কাছে তাদের প্রত্যাশাও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের মানুষের বিশ্বাস ও ভরসার প্রতীক। সেভাবেই মানুষের আস্থা অর্জন করে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেনাবাহিনীর সদস্য হিসাবে দেশের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে সর্বপ্রথম দরকার হচ্ছে পেশাদারিত্ব এবং প্রশিক্ষণ। এই পেশাদারিত্বের কাঙ্ক্ষিত মান অর্জনের জন্য আপনাদের সকলকে পেশাগতভাবে দক্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৎ এবং মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হতে হবে। পবিত্র সংবিধান এবং দেশ মাতৃকার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।’
সূদুরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশকে উন্নত করার জন্য সরকার লক্ষ্য ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুজিববর্ষে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রত্যেকটা ঘরে আলো জ্বলবে। ৯৭ ভাগ মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। শতভাগ ২০২১ সালের মধ্যে আমরা করতে পারবো। আর বাংলাদেশ একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না। তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকটা মানুষকে আমরা ঘর বাড়ি তৈরি করে দেব।’