বকেয়া থেকে বাঁচতে নাম পরিবর্তন, নতুন নামেও ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকি
১ নভেম্বর ২০২০ ২২:১৪
ঢাকা: রাজধানীর শাহবাগ বিপনী বিতানের একটি রেস্টুরেন্ট বকেয়া ভ্যাট থেকে বাঁচতে প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করেছে। সেই নতুন নামেও ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। তবে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানে শেষরক্ষা হয়নি তাদের। প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘নিউ মৌলী রেস্টুরেন্ট’, আগে যার নাম ছিলো ‘মৌলী স্ন্যাক্স’
রোববার (১ নভেম্বর) ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রেস্টুরেন্টটির আগের নাম ছিল মৌলী স্ন্যাক্স। তাদের কাছে অডিট কর্তৃপক্ষের আগের একটি অডিট আপত্তি ছিল ২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এই বকেয়া পরিহারের উদ্দেশে তারা এর নাম পরিবর্তন করে নিউ মৌলী রেস্টুরেন্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ভ্যাট ফাঁকির গোপন তথ্য থাকায় ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল গত ১৯ অক্টোবর নিউ মৌলীতে অভিযান করে অপরিশোধিত এই পুরানো বকেয়া অনাদায়ের প্রমাণ পান।
মইনুল খান আরও জানান, অভিযানে গোয়েন্দা দল রেস্টুরেন্টে উপস্থিত ভোক্তাদের সংখ্যা ও পরিশোধিত ভ্যাটের সাথে বিস্তর গরমিল পান। কাউন্টার যাচাই করে দেখা যায়, তারা ভ্যাট আইন অনুসারে কোন মূসক-৬.৩ রেজিস্টার ও অন্যান্য হিসাবপত্র সংরক্ষণ করেন না। কোনো ভোক্তাকে প্রকৃত ভ্যাট চালান দেন না। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন স্থান থেকে ৫৪ দিনের একটি কাঁচা চালানের বিক্রয় হিসাব পাওয়া যায়। এতে দেখা যায়, তারা ২৬ লাখ টাকা বিক্রয় করেছে এবং এর উপর ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
এদিকে ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, ধানমন্ডি ভ্যাট সার্কেলে তারা প্রতি মাসে ভ্যাট জমা দিয়ে আসছে মাত্র ৫-১০ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়া ও সুদসহ এই সময়ে নিউ মৌলী ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এই হিসাব আমলে নিয়ে এই রেস্টুরেন্টটি ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৮-২০ পর্যন্ত মোট ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রায় ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, পান্থপথসংলগ্ন গ্রিন রোডে গ্রিন চিলি ফাস্ট ফুড এন্ড মিনি চায়নিজ একইদিন (১৯ অক্টোবর) ভ্যাট গোয়েন্দার দল অভিযান করে দেখতে পায়, কোনো ভ্যাট চালান ছাড়াই তারা খাবারপণ্য বিক্রয় করছেন। তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা দল রেস্টুরেন্টের ৫ মাসের কাঁচা রেজিস্টারে গোপন বিক্রয় তথ্য উদ্ধার করেন। এতে ভ্যাট ফাঁকি নির্ণয় করা হয় ৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
ভ্যাট গোয়েন্দা দলের অনুসন্ধানে এই হিসাবে ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্টটি গত ৫ বছরে ৩৮ লাখ ১৬ হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। দুটো রেস্টুরেন্টের এই ভ্যাট ফাঁকি ও পূর্বের বকেয়া আদায়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটকে অনুরোধ করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর।
এসব বিষয়ে ভ্যাট আইনে দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।