‘চার নেতা জীবন দিয়েছেন, ক্ষমতার মসনদের কাছে মাথানত করেননি’
৩ নভেম্বর ২০২০ ২১:০৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, ‘চার জাতীয় নেতা রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, কিন্তু ক্ষমতার মসনদের কাছে মাথানত করেননি, বিত্তবৈভবের হাতছানির কাছে মাথানত করেননি। রাজনৈতিক কর্মী হতে হয় এমনই। একজন সত্যিকারের রাজনৈতিক কর্মীর পক্ষে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কখনোই সম্ভব নয়।’
মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জেল হত্যা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল যে রশীদ-ফারুক গং, তারাই জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর চার নেতাকে যখন জেলে নেওয়া হয়, তখন জেলখানায় তাদের অনেক প্রলোভন দেখিয়েছিল খুনিরা। কিন্তু উনারা সকল প্রলোভনকে থুথু মেরে দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন। এজন্যই বঙ্গবন্ধুর খুনিরা তাদের পথের কাঁটা হিসেবে গণ্য করে তাদের জেলের ভেতরেই নির্মমভাবে খুন করেছিল।’
‘খুনিরা কখনো ইতিহাসের দেওয়ালের লিখন পড়ে না। তারা জানে না, রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হত্যা করে তার আদর্শকে হত্যা করা যায় না। সেজন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেদিন স্লোগান উঠেছিল, এক মুজিবের রক্ত থেকে লক্ষ মুজিব জন্ম নেবে। সেই স্লোগান সত্যি হয়েছে। আজ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর কন্যার হাত ধরে মুজিবের স্বপ্নের সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা হতে চলেছে।’
চার নেতার পথ অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরাও চার নেতাকে অনুসরণ করে প্রকৃত নীতি-আদর্শের রাজনীতি চর্চার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবো। আমরাও বিত্তবৈভবের কাছে কখনো আত্মসমর্পণ করবো না। আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।’
একই সভায় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় এদেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তিনি সেটা টের পেয়েছিলেন। এজন্য তিনি যখন ষড়যন্ত্র নির্মূলে শুদ্ধি অভিযান শুরু করলেন তখনই ষড়যন্ত্রকারীরা সপরিবারে তাকে হত্যা করল। খুনিরা ভেবেছিল, বঙ্গবন্ধু এবং চার জাতীয় নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে আবারও পাকিস্তান বানানো যাবে। খুনিদের পথ ধরে জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ পরিচালনা করেছেন। আর আমরা মুক্তিযোদ্ধারা ছিলাম নিজ দেশে পরবাসী। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে এদেশকে মাথা তুলে দাঁড় করাতে পেরেছেন। এই উন্নত শির আর কখনো অবনত হবে না।’
নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি নঈমউদ্দিন চৌধুরী ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু। উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি সুনীল কুমার সরকার, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, শফর আলী ও শেখ মোহাম্মদ ইছহাক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী।
এদিকে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নগরীর চশমা হিলের বাসভবনে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে নগর মহিলা লীগ।
সভায় নগর মহিলা লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করেছিল, তাদের উদ্দেশ্য ছিল এদেশকে পাকিস্তান বানানো। কিন্তু ইতিহাসের বিচার খুবই নির্মম। আজ খুনিরাই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।’
নগর মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নীলু নাগের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মালেকা চৌধুরী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রহমতুন্নেছা, হাসিনা আক্তার টুনু, হুরে আরা বিউটি, শারমিন ফারুক, রোকসানা আক্তার, আয়েশা আলম, সদস্য আয়েশা ছিদ্দিকা, পারভীন আক্তার, সোনিয়া ইদ্রিস।