Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাওনা আদায়ে সিমেন্সের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি


৩ নভেম্বর ২০২০ ২২:৫৬

ঢাকা: সিমেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছ থেকে ন্যায্য পাওনা টাকা আদায়ের দাবিতে জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৭১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

তারা বলছেন, জি এম ইঞ্জিনিয়ারিং গত দেড় দশক ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছে এবং বছরে সরকারকে পাঁচ কোটি টাকারও বেশি কর পরিশোধ করে আসছে। সিমেন্স বাংলাদেশের সঙ্গেও ছয় বছর ধরে ব্যবসা করে আসছে। কিন্তু সেই সিমেন্সের কিছু কূটকৌশলের কারণেই আজ এই প্রতিষ্ঠানটির ভগ্নদশায় উপনীত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১১টায় গুলশান-১-এর ৮, লায়লা টাওয়ারে সিমেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের সামনে শুরু হয় প্রতিবাদ কর্মসূচি। পাওনা আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা লাগাতার কর্মসূচি পালন করে যাবেন বলে জানান প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, গত অর্থবছরে জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রায় ১২০ কোটি টাকার ব্যবসা চলমান ছিল। সব প্রকল্প যখন প্রায় শেষে পথে, ওই সময় জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বড় অঙ্কের টাকা পাওনা হয়, যা পরিশোধ করা হয়নি। বরং সিমেন্স বাংলাদেশের কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অনৈতিক ও হীন সুবিধা নিতে চান। সে কারণে তারা বিভিন্ন ধরনের অযৌক্তিক, অনৈতিক চাপ ও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে মিথ্যা অভিযোগ আনেন জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে। এ ধরনের অনৈতিক চাপের সঙ্গে সমোঝোতা না করায় জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সব পাওনা বন্ধ করে দেয়।

জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, সে ক্ষেত্রে আমরা প্রতিবাদ জানালে তারা আগ্রাসী হয়ে আমাদের নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে রাতারাতি আমাদের আমানত রাখা ব্যাংক গ্যারান্টি আট কোটি ৪৬ লাখ টাকা ইনক্যাশমেন্টসহ, সিমেন্স বাংলাদেশের কাছে আমাদের গচ্ছিত সাত কোটি ৭৫ লাখ নগদ টাকা জব্দ করে, যেন আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ ও ব্যবস্থা নিতে না পারি।

বিজ্ঞাপন

ব্যাংক গ্যারান্টি একটি কোম্পানির সুনামের ফল এবং ব্যাংক গ্যারান্টি ইনক্যাশমেন্ট হওয়ার অর্থ একটি ব্যংকের সঙ্গে সব ব্যবসায়িক সুযোগ-সুবিধা স্থবির হয়ে যাওয়া। বিষয়টি উল্লেখ করে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলেন, এর ফলে জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সব সকল চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে ও আর্থিকভাবে চরম সংকটাপন্ন অবস্থা তৈরি হয়। সিমেন্স বাংলাদেশের লিপ্সার কারণে গত দেড় বছর ধরে জি এম ইঞ্জিনিয়ারিং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে সিমেন্স বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা দুঃখপ্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে পাওয়া ৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করবেন বলে জানান জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও তারা কোনো হিসাব-নিকাশ যেমন করেনি, তেমনি সেই টাকা পরিশোধেরও কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে জানান তারা।

বর্তমানে জি এম ইঞ্জিনিয়ারিং পরিবার অত্যন্ত মানবতার জীবনযাপন করছে উল্লেখ করে তারা বলেন, সিমেন্স বাংলাদেশের মতো বহুজাতিক ও আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন কোম্পানির আগ্রাসন থেকে আমাদের রক্ষার জন্য এবং সবার পরিবারের স্বাভাবিক জীবনযাপনের লক্ষ্যে অত্যন্ত নিরুপায় হয়ে আজ আমরা আন্দোলনে নেমেছি। পাওনা আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থামাব না। আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচির সংবাদ তুলে ধরে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য মানবিকভাবে জোর অনুরোধ করছি এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়টি এরই মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান জি এম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অবস্থান কর্মসূচি জি এম ইঞ্জিনিয়ারিং পাওনা আদায়ে কর্মসূচি পাওনা টাকা সিমেন্স বাংলাদেশ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর